ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

টানা ৪০ দিন নামাজ আদায় করে ৯ শিশু পেল বাইসাইকেল 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৩ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২১
টানা ৪০ দিন নামাজ আদায় করে ৯ শিশু পেল বাইসাইকেল  বিজয়ী ৯ শিশু। ছবি: বাংলানিউজ

শেরপুর: শেরপুরের নকলা উপজেলায় টানা ৪০ দিন মসজিদে জামাতে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে ৯ জন শিশু পুরস্কার হিসেবে পেয়েছে একটি করে বাইসাইকেল।

বুধবার (১২ মে) দুপুরে উপজেলার ৩ নম্বর উরফা ইউনিয়নের উরফা গ্রামে অবস্থিত “উরফা পূর্বপাড়া সাহের উদ্দিন মেম্বার বাড়ী সংলগ্ন জামে মসজিদ” প্রাঙ্গণে ৭ জন শিশুর প্রত্যেককে ১টি করে বাই সাইকেল ও ২ জনকে সাইকেলের সমমূল্য টাকা তুলে দেন মসজিদ কমিটির সদস্যরা।

জানা যায়, শিশুরা যাতে মসজিদে যেতে অভ্যস্ত হয়, নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারে এবং একত্ববাদ ও সমাজে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠা করতে পারে এ লক্ষ্যে উরফা গ্রামের আব্দুল লতিফ ওরফে লতিফ মিয়ার ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী পারভেজ হাসান এই ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। প্রতিযোগিতায় শর্ত ছিলো ৮-১২ বছর বয়সী শিশুদের স্থানীয় একটি মসজিদে গিয়ে জামায়াতের সঙ্গে ৪০ দিন নামাজ আদায় করতে হবে। পুরস্কার হিসেবে তাদের প্রত্যেককে একটি করে বাই সাইকেল দেওয়া হবে। প্রতিযোগিতায় সাড়া দিয়ে প্রথম দিকে প্রায় ৪০-৪৫ জন শিশু নামাজ আদায় শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত ৯ জন টিকে থেকে বিজয়ী হয়েছে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে আজ বিজয়ীদের পুরস্কার হিসেবে একটি করে বাইসাইকেল তুলে দেওয়া হয়।

ব্যতিক্রমধর্মী এই আয়োজনের উদ্যোক্তা সৌদি আরব প্রবাসী পারভেজ হাসান বলেন, বর্তমান আধুনিক যুগে অধিকাংশ শিশুরাই মোবাইল, টিভি এবং ল্যাপটপের স্ক্রিনে নিজেকে সীমাবদ্ধ করে ফেলছে। শিশুদের মোবাইল আসক্তি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় বর্তমানে বেশিরভাগ শিশুদের মধ্যেই ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। শিশুরা যাতে নিয়মিত মসজিদে যেতে অভ্যস্থ হয়, নামাজের ফজিলত সম্পর্কে জানতে পারে, এ শিশুদের মধ্যে যাতে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে আগ্রহ সৃষ্টি হয় এমন উদ্দেশ্যেকে সামনে রেখে আমাদের এমন কর্মসূচি হাতে নেওয়া। এতে প্রায় অর্ধশতাধিক শিশু অংশগ্রহণ করলেও ৯ জন বিজয়ী হয়েছে। বিজয়ী ৭ জন শিশুকে ১টি করে বাইসাইকেল এবং ২ জন শিশু সাইকেল না নেওয়ায় তাদের সাইকেলের সমমূল্য টাকা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিশুরা টানা ৪০ দিন মসজিদে এসে নামাজ আদায় করেছে এতে তাদের মসজিদে আসতে জড়তা বা অলসতা কেটে গিয়েছে। জামাতে ৪০ দিন টানা ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ায় শিশুরা নামাজে অভ্যস্ত, নামাজের প্রতি আগ্রহ বা ভালোবাসা সৃষ্টি হয়েছে। পুরস্কার হিসেবে পাওয়া সাইকেলটি চালিয়ে শিশুদের শারীরিক ব্যায়ামের কাজ সম্পন্ন হবে এবং শিশুরা সময় কাটাতে পারবে এতে তাদের মাঝে মোবাইল, অনলাইন গেম আসক্তি কিছুটা হলেও কমবে এবং শিশুরা শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে।

এরকম কর্মসূচি প্রত্যেকটা এলাকায় আয়োজন করা গেলে শিশুদের মধ্যে মোবাইল আসক্তি কমবে, শিশুরা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও রীতি নীতি পালনে আগ্রহী হবে এবং শিশুরা মানবিক ও উদার মনোভাব নিয়ে বেড়ে উঠতে পারবে বলে ধারণা করছেন ওই প্রতিযোগিতার আয়োজক ও স্থানীয়রা।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৩২ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।