বরিশাল: ঈদ শেষে বরিশাল থেকে রাজধানীমুখী মানুষের দুর্ভোগ চরমে ওঠেছে। লঞ্চ বন্ধ নৌ-রুটে যাত্রীদের চাপ না থাকলেও মহাসড়কে বাস, থ্রি-হুইলারসহ বিভিন্ন পরিবহনের ওপর চাপ পড়েছে।
পাশাপাশি মানুষের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নেওয়ারও অভিযোগ ওঠেছে। তবে পুলিশ বলছে তাদের কাছে অভিযোগ দেওয়া হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোববার (১৬ মে) সকাল থেকে বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল ও রূপাতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে।
সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাইক্রোবাসের কারণে এ দু’টি বাস টার্মিনাল এলাকাতেই মাঝে মধ্যে যানজটের সৃষ্টি হয়।
শ্রমিকরা বলছেন, করোনার কারণে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় চাপ পড়েছে সড়ক পথের ওপর। আর ঈদ শেষে বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ একযোগে রাজধানীমুখী হচ্ছেন।
এদিকে প্রয়োজনের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা কম থাকায় বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
তারেক খান নামে এক যাত্রী জানান, প্রয়োজনের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা আজ অনেকটাই কম মনে হচ্ছে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাড়তি ভাড়া চাচ্ছে চালকরা। সেইসঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মানারও কোনো বালাই নেই। বাসগুলোর প্রতিটি সিটে যাত্রীদের বসানো যেমন হচ্ছে, তেমনি বাড়তি ভাড়াও রাখা হচ্ছে।
তবে বাস শ্রমিকরা বলছেন, যাত্রীদের বার বার বলা হলেও তারা মাস্ক পড়তে অনিহা প্রকাশ করছেন। আবার অনেকে মাস্ক পরলেও তা মুখে না দিয়ে থুতনির নিচে নামিয়ে রাখছেন। সেইসঙ্গে অনেক যাত্রী আছেন যারা পরিবার নিয়ে একসঙ্গে বসতে চাচ্ছেন, কোনোভাবেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে আলাদা আলাদা সিট ব্যবহার করতে রাজি হচ্ছেন না। বেশি জোড়াজুড়ি করলে বাকবিতণ্ডা হচ্ছে বিধায় কাউকে চাপ দেওয়াও যাচ্ছে না। তবে এক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে জানান শ্রমিকরা।
কাদের হাওলাদার নামে অপর এক যাত্রী জানান, বরিশাল থেকে নন এসি বাসে মাওয়ার ভাড়া ২২০ টাকা। তবে আন্তঃজেলায় বাস চলাচলের অনুমতি থাকায় সরাসরি মাওয়ায় কোনো বাস যাচ্ছে না। ফলে ভূরঘাটা পর্যন্ত গিয়ে দুই-তিন দফা যানবাহন পাল্টে মাওয়া যেতে কয়েকগুণ খরচ হওয়াটা স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, সিএনজি, মাইক্রোবাস কিংবা অন্য কোনো পরিবহনে এ রুটে বরিশাল থেকে মাওয়া যেতে পাঁচ থেকে ৭০০ টাকা খরচ হচ্ছে। আর দৌলতদিয়ায় যেতে খরচ ও ভোগান্তি আরও বেশি হচ্ছে।
তবে এ ধরনের অভিযোগ কোনো যাত্রীর কাছ থেকে পাওয়া গেলে অবশ্যই যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক বিদ্যুৎ চন্দ্র।
বরিশাল নদীবন্দর থেকে রাজধানী ঢাকার সদরঘাট পর্যন্ত লঞ্চে যাত্রীপ্রতি সরকার নির্ধারিত ভাড়া ২৫৫ টাকা। তবে লঞ্চ কোম্পানিগুলো বিশেষ দিনগুলো ছাড়া ২০০ টাকার ওপরে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নেয় না। আর বরিশাল থেকে মাওয়া হয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ি বা বাবুবাজার পৌঁছাতে যানবাহন ভেদে স্বাভাবিক সময়ে যাত্রীপ্রতি পাঁচ থেকে ৭০০ টাকা খরচ হলেও এখন সেখানে এক হাজার থেকে ১৩০০ টাকার মতো খরচ হচ্ছে। আর তাতে বারবার যানবাহন পাল্টাতে গিয়ে যাত্রীদের ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে কয়েকগুণ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৮ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২১
এমএস/আরবি