নীলফামারী: নীলফামারীর ডালিয়ায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ যেন সমুদ্র সৈকতে পরিণত হয়েছে। করোনায় ঘরবন্দি মানুষ ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে বৃহত্তম তিস্তা ব্যারেজ ঘুরতে গিয়ে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।
শুধু বিনোদন নয়, প্রকৃতির খোলা হাওয়ায় ঘুরে একটু শান্তির উদ্দেশ্যে লোকজন ভিড় করছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে, কেউবা বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে।
সোমবার (১৭ মে) বিকেলে সেখানে বিনোদন পিপাসুদের উপচেপড়া ভিড়। ঈদ বিনোদনে করোনাকালীন ‘লকডাউনে’ থাকা পরিবারের মানুষগুলো তিস্তা পাড়ে এসে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছে। তিস্তা নদী ও তিস্তা ব্যারাজ যেন তাদের কাছে সমুদ্র সৈকতে পরিণত হয়েছে। উঠতি বয়সের তরুণ-যুবকরা নদীর স্বচ্ছজলে ঝাঁপিয়ে পড়ে গোসলেও মেতে উঠছে।
ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজে ঘুরতে আসা দম্পতি সালেক-রোজিনা বলেন, নতুন বিয়ের পর করোনার কারণে কোথাও ঘুরতে পারেনি তাই আজ এখানে এসেছি।
তিস্তা নদীতে এখন ভরপুর পানি। উজানের ঢল আসছে। তিস্তাপারে দাঁড়ালে বাতাসে শোনা যায় পানির শোঁ শোঁ শব্দ ও ঢেউ। হিমালয় থেকে নেমে আসা এ নদীকে ঘিরে দুপারের মানুষ গড়ে তুলেছে বসতি ও জীবিকা, নীল জল আর সবুজ রঙে প্রকৃতি এঁকেছে শ্যামল ছবি। ফিরে এসেছে জীববৈচিত্র্য। ফিরে পেয়েছে অনাবিল শান্তি। অগণিত গাছপালার শ্যামল ছায়া আর পাখির কলতানে মুখরিত এখন তিস্তা। জেলেরাও জাল ফেলে ধরছে বৈরালী মাছ। আকাশে উড়ছে পাখি। পাখির মতো ঈদ আনন্দে ভাসছে মানুষজন।
নদীর এই ভরা পানিতে তিস্তার বুকে ইঞ্জিনচালিত নৌকার পাশাপাশি দ্রুতবেগে একপাশ থেকে আরেকপাশে ছুটে চলছে স্পিডবোট। তাতে উঠে নদীর শীতল বাতাস আর নদীর পানির উথালপাতাল ঢেউ শরীরে মাখছে প্রকৃতিপ্রেমীরা। তারা হৈ-হুল্লোড়ে মেতে ওঠছে। বড় বড় ঢেউ এসে ধাক্কা দিচ্ছে তিস্তার কূলে। ছিটে আসা জলরাশি ছুঁয়ে মজা করছেন শিশু ও তরুণীরা।
তিস্তা নদীতে বিনোদনের জন্য ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও স্পিডবোটে উঠতে জনপ্রতি খরচ হচ্ছে মাত্র ৩০ টাকা। ফলে মুহূর্তেই ভরে যাচ্ছে বোটগুলো। প্রতিদিন পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের ঢল নামছে। শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধার মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে তিস্তাপাড়।
স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত এসআই সিদ্দিক বলেন, ‘সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা মাঠে রয়েছেন। এতো লোকের সমাগম কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা তাদের চলে যেতে অনুরোধ করে মাইকিং করছি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২১
আরএ