ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

১০ মিনিটের ব্যবধানে জন্ম নেওয়া তিন শিশুর এক রাতেই মৃত্যু

স্টাফ করেস্পন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২১ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২১
১০ মিনিটের ব্যবধানে জন্ম নেওয়া তিন শিশুর এক রাতেই মৃত্যু

বরিশাল: বরিশালের হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অস্ত্রোপচার ছাড়াই একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন এক গৃহবধূ। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, সাড়ে ৫ ঘন্টার ব্যবধানে একে একে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে তিন শিশুই।

রোববার (০৬ জুন) মৃত তিন শিশুকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে শনিবার দিনগত রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।

স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, হিজলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর ফারুক বেপারীর স্ত্রী সেলিনা বেগম (২৮) আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। শনিবার বেলা দুইটার দিকে তার প্রসববেদনা উঠলে প্রথমে তাকে বেসরকারি একটি হাসপাতালে এবং পরে হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

হিজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেল চারটার দিকে ১০ মিনিটের ব্যবধানে তিন ছেলে সন্তানের জন্ম দেন সেলিনা বেগম।  

হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. শাহরাজ হায়াত জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জন্ম নেওয়া তিন নবজাতকের প্রত্যেকের ওজন ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় কম এবং প্রত্যেকেরই শ্বাসকষ্ট ছিল। তবে তাদের মা আশঙ্কামুক্ত ছিলেন। শিশুদের অবস্থা সংকটাপন্ন থাকার কারণে জন্মের পরপরই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের বরিশালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।  

স্বজনরা জানান, জন্মের পরপরই চিকিৎসকেরা উন্নত চিকিৎসার জন্য নবজাতকদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু বরিশালে নেওয়ার জন্য অর্থের জোগাড় করতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়। এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা তিন নবজাতককে নিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছান। সেখানে সাড়ে ১১টার দিকে ১০ মিনিটের ব্যবধানে একে একে তিন নবজাতকের মৃত্যু হয়।  

শেবাচিম হাসপাতালের শিশু বিভাগের অধ্যাপক উত্তম কুমার সাহা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই তিন নবজাতককে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এ সময় তাদের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। ভর্তি করা প্রথম শিশুর ওজন ১ কেজি ১৪৫ গ্রাম, দ্বিতীয় শিশুর ১ কেজি ৪৫ গ্রাম এবং তৃতীয় শিশুটির ওজন ছিল ১ কেজি ৯০ গ্রাম।

তিনি আরো জানান, ওজন ও অপরিণত বয়সে ভূমিষ্ঠ হওয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সক্ষমতা কম এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ছিল না বলেই তাদের শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১১টা ৪০ মিনিটের মধ্যে ওই তিন নবজাতক একে একে মারা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ০০২১ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০২১
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।