ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ত্রাণের টাকায় রাস্তা সংস্কার, ১০ মাসেই ভেঙে বিশাল গর্ত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৯ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২১
ত্রাণের টাকায় রাস্তা সংস্কার, ১০ মাসেই ভেঙে বিশাল গর্ত রাস্তা সংস্কারের ১০ মাসেই ভেঙে গর্ত। ছবি: বাংলানিউজ

নীলফামারী: প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ত্রাণের টাকায় সংস্কার করা গ্রামীণ জনপদের একটি রাস্তা মাত্র ১০ মাসেই ভেঙে মাঝামাঝি বিশালকৃতির গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। সেসঙ্গে দেখা দিয়েছে যেকোনো মুহূর্তে ওই গর্তে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা।

 

নিম্নমানের উপকরণ ও যাচ্ছে তাইভাবে কাজ করায় এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এজন্য তারা দ্রুত সমস্যা সমাধান এবং দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়েছেন।  

জানা যায়, নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের উত্তর সোনাখুলী দলবাড়িপাড়া এলাকায় চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি কাঁচা ছিল। মাত্র ১০ মাস আগে সৈয়দপুর উপজেলা ত্রাণ কার্যালয়ের অধীনে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ৫১ লাখ টাকা ব্যয়ে হেরিংবোন করা হয়েছে। কাজ করার সময়ই নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা এবং বেডিংয়ে বালু দিয়ে ঠিকমতো ডাম্পিং না করেই কোনোভাবে শেষ করায় এলাকাবাসী অভিযোগ তুলেছিল। কিন্তু প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি গুরুত্ব না দেওয়ায় ঠিকাদার নীলফামারী শহরের সোহেল কন্ট্রাকশন এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে নামকাওয়াস্তে কাজ করে যথারীতি বিল উত্তোলন করেছে।  

এদিকে কাজ করার মাত্র ১০ মাসের মাথায় রাস্তাটির মাঝ বরাবর বেশ কয়েক জায়গায় বড় বড় গর্ত হয়েছে। গত কয়েকদিনের সামান্য বৃষ্টিতেই ওই গর্তের মাধ্যমে পানি গড়িয়ে রাস্তাটি পাশের নিচু জমিতে সম্পূর্ণ মাটি ও ইট ধসে গেছে। এর ফলে রাস্তার অর্ধেকের বেশি অংশ ভেঙে যাওয়ায় চলাচলে চরম অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। কোনো ধরনের যানবাহন যাতায়াত করতে পারছে না। ফলে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। তাছাড়া প্রায় কোমর সমান গর্তে যেকোন সময় যানবাহন বা লোকজন পড়ে গিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
 
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রায় ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও গর্ত সংস্কারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাস্তা ভাঙার বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে মোবাইলফোনে অবগত করেছি। তারা কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় রাস্তাটি ঠিক করতে পারছি না।
 
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবু হাসনাত সরকার মোবাইলফোনে জানান, রাস্তাটি প্রায় ১ বছর আগে সংস্কার করা হয়েছে। কয়দিন বাদে বর্ষাকাল শুরু, বৃষ্টির কারণে রাস্তার নিচের মাটি সরে যাওয়ায় হয়তো গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় উপরের মাটি, বালু ও ইট ধসে গেছে। দ্রুত ঠিকাদারের মাধ্যমে রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
 
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সোহেল কন্সট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী সোহেল রানার সঙ্গে মোবাইলফোনে কথা হলে তিনি জানান, রাস্তাটির কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ১ বছর আগে। যথাযথভাবে কাজ সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছি। এখন ভেঙে গেলে তা দেখার দায়িত্ব আমার নয়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।  

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাসিম আহমেদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। পিআইওকে বলেছি রাস্তাটি ঠিক করে দেওয়ার জন্য।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০২১
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।