ঢাকা: অর্থের বিনিময় সুমি হাসানের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন ফারুকুল ইসলাম, কাজী ইমরান মাহমুদ ও সালাউদ্দিন খলিফা ওরফে সুমন। তাদের তিনজনের কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন সুমি।
টাকা না দিলে বিষয়টি ফারুকুল ইসলামের স্ত্রীর কাছে ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। এতেই বাধে বিপত্তি। ফারুকুল, ইমরান ও সালাউদ্দিন গত বছরের ১৮ জুন রাতের কোনো এক সময়ে সুমিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর ১৯ জুন সকাল ৭টার দিকে ভাড়া করা একটি অটোরিকশাযোগে সুমির লাশ রাজধানীর খিলক্ষেত থানাধীন ৩০০ ফুট সড়কের দক্ষিণ পাশের ঝোপের ভেতরে ফেলে দেন।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন সিআইডির (ঢাকা মেট্রো) অতিরিক্ত জিআইজি শেখ অমর ফারুক।
তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার সুমি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিন আসামিকে গ্রেফতার করে করে সিআইডি। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তিন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন, গত বছরের ১৯ জুন রাজধানীর খিলক্ষেত থানাধীন ৩০০ ফুট সড়কের দক্ষিণ পাশে ঝোপের ভেতর থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে সিআইডি ক্রাইমসিন ইউনিট বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। ওই নারীর মরদেহের ছবি, ফিঙ্গার প্রিন্ট ও বায়োলজিক্যাল অ্যাভিডেন্স সংগ্রহ করা হয়। ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে অজ্ঞাতনামা ওই নারীর পরিচয়ও শনাক্ত করা হয়।
সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, নিহত সুমি হাসান (৩০) গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়া থানার ছিকটিবাড়ী গ্রামের চান মিয়া শেখের মেয়ে। তার মায়ের নাম আম্বিয়া খাতুন। তার স্বামী জাহিদ হাসান একজন গাড়িচালক বলে জানতে পারি।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে জানা যায়, নিহত সুমির স্বামী জাহিদ হাসান ঢাকায় থাকেন। তার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তথ্য-প্রযুক্তি মাধ্যমে জানান যায় তার অবস্থান জিগাতলায়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে জাহিদ হাসান জানান তিনি নিহত সুমি হাসানের প্রাক্তন স্বামী। এরপর সুমির বাবা-মায়ের ঠিকানায় গিয়ে তার মোবাইল নম্বর নিয়ে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে তার কল ডিটেইল রেকর্ড (সিডিআর) পর্যালোচনা করে সবশেষ যোগাযোগকারী তিন জনের নম্বর পাওয়া যায়। মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে ফারুকুল ইসলাম (৪৩), কাজী ইমরান মাহমুদ (৩২) ও সালাউদ্দিন খলিফা ওরফে সুমন (৩৮) নামে তিনজনকে পাওয়া যায়।
নিহত সুমি হাসানের কললিস্টের সূত্র ধরে ৩ আসামিকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনজনই সুমিকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন বলে জানান সিআইডির অতিরিক্ত জিআইজি শেখ অমর ফারুক।
তিনি বলেন, সুমি হাসানকে হত্যা ও লাশ গুমের বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেফতার হওয়া তিন আসামি। নিহত সুমির ময়নাতদন্তের সময় তার ভ্যাজাইনাল সোয়াব এর ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় গ্রেফতার আসামিদের ডিএনএর সঙ্গে সুমির ভ্যাজাইনাল সোয়াবে থাকা ডিএনএ প্রোফাইলে মিল পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২১
এসজেএ/এমজেএফ