বরিশাল: করোনায় কাজ হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন মুক্তিযুদ্ধের গল্প লেখক, শিশু সাহিত্যিক এবং চিত্রশিল্পী সাইফুল্লাহ নবীন। তাই করোনাকালে ঋণের দায় শোধ করতে কিডনি বিক্রি করতে চান এখন।
আর এ কারণে কিডনি বিক্রির কথা উল্লেখ করে সাদা কাগেজে লাল রংয়ের লেখা একটি প্ল্যাকার্ড হাতে রোববার (২৭ জুন) দুপুর পৌঁনে ১২টায় বরিশাল নগরের সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে দাঁড়িয়ে কিডনি বিক্রির কথা প্রকাশ করতে দেখা গেছে তাকে।
প্ল্যাকার্ডে ‘করোনা ২ বছরের কাছাকাছি, অসহায় মানুষ, অসহায় আমি, কাজ নেই কর্ম নেই, ৩ লাখ টাকা ঋণ, ঋণ পরিশোধ করতে কিডনি বিক্রি করতে চাই, রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ’ লেখা রয়েছে।
এ সময় কৌতূহলী পথচারীরা দাঁড়িয়ে তার প্রদর্শিত প্ল্যাকার্ড পড়েন, যা নিয়ে মুহুর্তের মধ্যেই নগরজুড়ে বেশ আলোড়নও সৃষ্টি হয়।
এসময় সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সাইফুল্লাহ নবীন বলেন, তার পরিবারে পাঁচ জন সদস্য রয়েছেন। তার প্রকাশিত ৪৯টি বই বাজারে রয়েছে। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ১০টি, শিশুতোষ গল্পের বই ২১টি, উপন্যাস ১৪টি এবং শিশুদের ছবি আঁকার বই রয়েছে চারটি। করোনাকালে বই বিক্রি শূন্যের কোটায়। সাইনবোর্ড শিল্প তথা ছবি আঁকার কাজ নেই বললেই চলে।
এ অবস্থায় করোনাকালীন দুই বছরে জমি বন্ধক রেখে এবং আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা ধার দেনা করে সংসার চালিয়েছেন। এখন আর কেউ টাকা ধার দিতে চায় না। বই লেখার সম্মানীর টাকাও দিচ্ছেন না প্রকাশকরা। এ কারণে পরিবার নিয়ে চরম বিপাকে আছেন তিনি। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া এবং সংসারের ব্যয়সহ ঋণের টাকা পরিশোধ করতে কিডনি বিক্রি করতে চান তিনি। এ ছাড়া আর কোনো বিকল্প হাতে নেই বলে জানান লেখক ও চিত্রশিল্পী সাইফুল্লাহ নবীন।
তার বাড়ি বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চরহোগলা গ্রামে। এর আগে লেখালেখির পাশাপাশি ঢাকায় বাংলা একাডেমির একুশের বই মেলায় বর্ণমালা শিল্প ও স্টল সাজসজ্জার কাজ করতেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২১
এমএস/কেএআর