ঢাকা: লকডাউন ঘোষণার পর ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে সাতদিনের সরকারি ‘বিধি-নিষেধ’ বা ‘কঠোর লকডাউনে’ সব অফিস, যানবাহন ও দোকানপাট বন্ধ রেখে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
লকডাউন ঘোষণায় ঘরমুখো মানুষের চাপে রাজধানী বিভিন্ন স্থানে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ছোট-বড় সব পরিবহন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ঘরমুখো মানুষ। এছাড়া অফিসগামী ও নিত্য প্রয়োজনে বের হওয়া সাধারণ মানুষও বেশ ঝামেলা পার করেছে যানবাহনে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় তীব্র যানজট দেখা যায়। বিশেষ করে পান্থপথ থেকে কারওয়ান বাজার ও হাতিরঝিলগামী সড়কে দীর্ঘ সময় থমকে ছিল প্রাইভেটকার। লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ হওয়ায় রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ি বেশি বলে এই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের।
এছাড়া রিকশা ও মোটরসাইকেলের আধিক্যও ছিল লক্ষ্য করার মতো। গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে রাস্তাগুলোতে মূলত রিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেলের দাপট দেখা যাচ্ছে। কোনো গণপরিবহন চলছে না। সিএনজিচালিত অটোরিকশাও দেখা যায়নি সড়কে। সাধারণ মানুষকে হেঁটে ও রিকশায় করে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। ফলে যানবাহনগুলোকে একটু সামনে এগিয়েই আবারও থেমে থাকতে দেখা যায়।
দুপুরে রাজধানীর সাতরাস্তা মোড়ে বশির আহমেদ নামে এক যাত্রী বলেন, লকডাউনের সময় জরুরি কারণ ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হলে তার বিরুদ্ধে নাকি কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু এখন তো অন্য অবস্থা। বিষয়টা যেন ঠিক উল্টো হয়ে গেছে। সবাই তো দেখি বাইরে। আর যানজট তো আছেই, প্রায় আধাঘণ্টা হলো এক সিগন্যালেই বসে আছি।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আতিকুল ইসলাম নামে এক যাত্রী বলেন, লকডাউনে রাস্তা ফাঁকা থাকার কথা। কিন্তু তার কোনো নাম-গন্ধই নেই। একেতো বাস বন্ধ, অতিরিক্ত রিকশা ভাড়া দিয়ে অফিসের কাজে যাতায়াত করতে হচ্ছে, তার উপর আবার সড়কে তীব্র যানজট। সম্প্রতি এত যানজট দেখা যায়নি।
কারওয়ান বাজার এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর বিপ্লব ভৌমিক বলেন, লকডাউনের ঘোষণায় অনেক মানুষই ঢাকা ছাড়ছেন। একই সঙ্গে গণপরিবহন বন্ধ হওয়ায় সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বেশ কিছুটা বেড়েছে। ফলে মাঝে মধ্যে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে সাতদিনের সরকারি ‘বিধি-নিষেধ বা ‘কঠোর লকডাউন’ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ওই সাতদিন সব অফিস, যানবাহন ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে। সরকারি ‘বিধি-নিষেধ’ ও মানুষের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে মাঠে টহলে থাকবে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব এবং আনসার সদস্যরা। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিধিনিষেধের সময় বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না। এরই মধ্যে পুলিশ জানিয়েছে, বিনা কারণে বাড়ির বাইরে গেলেই করা হবে গ্রেফতার।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২১
এইচএমএস/এএ