সাভার (ঢাকা): সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় কাঁধে ছোটো হ্যান্ড ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন রুপালি। তিনি আসলে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন।
শুধু তিনি নন, এ সাতসকালে নিজের কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য পরিবহনের অপেক্ষা করেছেন আরও কয়েকশত মানুষ।
স্বাস্থ্যবিধির কথা চিন্তা করে পুরো বাংলাদেশে ‘কঠোর লকডাউন’ চললেও শিল্প অঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ায় এর ছিটেফোঁটা চিহ্নও নেই। প্রতিদিনের মতো সকালে গাদাগাদি করে কর্মস্থলে গেছেন পোশাক শ্রমিকরা। ‘লকডাউন’ হওয়াতে তাদের আরও কষ্ট বেড়ে গেছে। গণপরিবহন না পেয়ে গাদাগাদি করে হিউম্যান হলারে (লেগুনা) যেতে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০১ জুলাই) ‘লকডাউনের’ প্রথম দিনের সকাল ৭টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইলে এ চিত্র দেখা গেছে। আরও দেখা গেছে, সড়কে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করলেও কোনো বাস চলছে না। এছাড়া দুই একটা লেগুনা ও ব্যাটারি চালিত রিকশা চলছে। আর এসব ছোটো পরিবহনেই হুমরি খেয়ে পড়েছেন শ্রমিকরা।
শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার বাইপাইল, নবীনগর, পল্লিবিদুৎ, ডিইপিজেড, শ্রীপুর, জামগড়া, জীরানী ও ছয়তলা এলাকাতেও একই চিত্র।
সড়কে অপেক্ষারত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ‘লকডাউন’ হলে সব খাতেই ‘লকডাউন’ হওয়া উচিত। সব কিছু বন্ধ করে কারখানা খোলা রেখেছে। এতে পরিবহন না পেয়ে তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
রুপালি নামের সেই পোশাক শ্রমিক বাংলানিউজকে বলেন, এ ‘লকডাউন’ কাদের জন্য। আমরা সকালে অফিসে যাই কষ্ট করে, রাতে আবার অফিস থেকে আসব কষ্ট করে৷ কেন আমার কারখানাকে সরকার বলে দিলেই তো হয় যে নিজস্ব গাড়ির ব্যবস্থা করে দিতে। তাহলে তো আমাদের আর সমস্যা হয় না। সারা বাংলাদেশে ‘লকডাউন’ আছে, তবে তা আমাদের জন্য না৷
স্টার লাইন নামের এক পোশাক কারখানার কর্মকর্তা জামিল বাংলানিউজকে বলেন, ‘লকডাউন’ মানে ‘লকডাউন’। আমাদের দুই দিন সময় দিয়ে একবারে ‘লকডাউন’ দিতো। যারা যেখানে যাওয়ার দরকার গিয়ে ‘লকডাউনে’র সময় কেউ বের হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হতো। তাহলে কোনো সমস্যাই হতো না। এভাবে কিছুই হয় না। শুধু শুধু শ্রমিকদের কষ্ট দেওয়া হচ্ছে।
বাইপালে এক রিকশাচালক বাংলানিউজকে বলেন, আমি সকালে বাইর হয়েছি ভয়ে ভয়ে৷ দুই একটা খেপ মেরেই চলে যাব। আমরা না থাকলে তো শ্রমিকরাও যেতে পারবো না৷
এদিকে সকাল ৯টা গড়ার পর থেকে প্রশাসনের গাড়ি দেখা গেছে রাস্তায়। কাউকে বাইরে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। হাতে মাইক নিয়ে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধির কথা বোঝানো হচ্ছে ও নিজ নিজ ঘরে যেতে বলা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সাভারে এক কোম্পানি সেনাবাহিনী ও এক প্লাটুন বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) মোতায়ন করা হয়েছে৷ সরকার পোশাক কারখানাগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে, নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা করতে। কিন্তু যারা করবে না, তাদের বিষয়ে আমি রিপোর্ট করব।
বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০২১
এসআই