ঢাকা: ভাবির সঙ্গে ফোন ছিল না। উনি মোবাইল ব্যবহার করতেন না, খুব সহজ-সরল মানুষ ছিলেন।
শুক্রবার (৯ জুলাই) বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গের পাশে নারায়ণগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ভাবি রাইমার মরদেহ শনাক্ত করতে এসে দেবর রাসেল আহমেদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে একথা বলেন।
তিনি জানান, কিশোরগঞ্জের এই পরিবার দীর্ঘদিন থেকেই বসবাস করেন ঢাকায়। সংসারে একটু স্বচ্ছলতা আনতেই ভাবি চাকরি করতেন। কিন্তু চাকরি করলেও পরিবারের সদস্য, বিশেষ করে শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর-ননদের প্রতি তার ভালোবাসা ছিল অফুরান।
রাসেল আহমেদ বলেন, আমরা জানতে পেরেছি গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে। এরপর সেখানে গিয়ে আমরা খোঁজ করেছি, কিন্তু পাইনি। এরপর অনেক খোঁজা-খুঁজির পর ওখান থেকে এখানে আসতে বলে। ভাবি কাজ করতেন কারখানার দোতলায়।
দুই ছেলে আর দুই মেয়েসহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের নিয়ে রাইমার সাজানো সংসার। রাইমাকে হারিয়ে তাই পাগলপ্রায় পরিবারের সব সদস্য। বড় ভাই আর ভাতিজারা মেডিক্যালে এসে পৌঁছাতে পৌঁছাতে পরিবারের অন্য সবাইকে নিয়ে সে কথাই জানাচ্ছিলেন রাইমার দেবর। পাশে কাঁদছিলেন তার স্ত্রীও। কাঁদতে কাঁদতে চাপা স্বরে বলছিলেন- বু’র সঙ্গে আমার আর কথা হলো না!
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ ঘণ্টা পর কারখানার ভেতর থেকে এক এক করে ৪৯টি পোড়া মরদেহ বের করে আনা হয়েছে। মরদেহগুলো ফায়ার সার্ভিসের চারটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়। এর আগে, এ ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এ নিয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫২ জন। এছাড়া আহত হন আরও অন্তত ৫০ জন।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫০ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০২১
এইচএমএস/এএ