হবিগঞ্জ: গলায় ঝোলানো ফেস্টুনটিতে নিহত মেয়ে ইতির তিনটি ছবি। একটি রক্তাক্ত, দ্বিতীয়টি বস্তাবন্দি মরদেহের ও হাস্যোজ্জ্বল তৃতীয় ছবিটিতে আগের।
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ রেল জংশনের পাশ দিয়ে হাঁটছিলেন ইতির বাবা চটপট্টি বিক্রেতা আব্দুস শহিদ। গলায় ঝুলে থাকা ফেস্টুনটি ময়লা হয়ে গেছে, ছিঁড়েও গেছে দুয়েক জায়গায়।
আব্দুস শহিদ বাংলানিউজকে বলেন, পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ, এর চেয়ে ভারী আর কি হতে পারে? আমার মেয়ের লাশটি ছিল আরও বেশি ভারী। কারণ তাকে হত্যা করা হয়েছে। তিন বছর ধরে বিচারের দাবিতে রাস্তায় রাস্তায় হাঁটছি, পুলিশের কাছে গিয়েছি। কিন্তু এখনও আসামি শনাক্ত হয়নি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শায়েস্তাগঞ্জের বিরামচর এলাকার আব্দুস শহিদের মেয়ে ইতি আক্তার (৬) বিরামচর সাহেব বাড়ি মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত মসজিদ ভিত্তিক গণশিক্ষা কেন্দ্রের শিশু শ্রেণির ছাত্রী ছিল। ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই সেখানে পড়তে গিয়ে আর বাড়ি ফিরেনি মেয়েটি। পরদিন মসজিদের পার্শ্ববর্তী জলাশয় থেকে তার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরই মসজিদের দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ইতির বাবা অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর শায়েস্তাগঞ্জ থানার তৎকালীন উপ পরিদর্শক (এসআই) রাজিব ও পরিদর্শক (তদন্ত) মানিকুল ইসলাম দুই দফায় তদন্ত করেন। এরও প্রায় ১১ মাস পর মামলাটি স্থানান্তর করা হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআইতে)।
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল বাংলানিউজকে বলেন, শিশুটিকে হত্যার তিন বছর হয়ে গেছে। যে বা যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা উচিত। তবে এ মামলায় যেন নিরপরাধ কাউকে হয়রানি না করা হয় সে বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়ার জন্য তিনি তদন্তকারী সংস্থার উদ্দেশে বলেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হবিগঞ্জ পিবিআইর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফ রেজাউল করিম বাংলানিউজকে জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী মেয়েটিকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১১ মাস পরে মামলাটি আমাদের হাতে আসে। তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে তদন্ত চলছে। দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। শিগগির মামলাটির রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২১
আরএ