ঢাকা: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধের কারণে বন্ধ রয়েছে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। কোমলমতি শিশুদের স্কুল বন্ধ থাকায় এর সুযোগ নিচ্ছে কিছু অসাধু গেমস ব্যবসায়ীরা।
যেখানে সেখানে গড়ে উঠেছে ভিডিও গেমসের দোকান। এ সব দোকানে ঘণ্টা হিসাবে মোবাইল ভাড়া দেওয়া হয়। ফ্রি ফায়ার গেমসের জন্য প্রতি ঘণ্টায় মোবাইল ভাড়া দিতে হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। আর প্রতি গেমস ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।
বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) পল্লবীর ১১ নম্বর বাউনিয়াবাঁধ ঘুরে দেখা যায়, সুরভী স্কুল, আইডিয়াল হাইস্কুল ঘিরে এ-ব্লক, ই-ব্লক ও ডি-ব্লকে ৫০ টির মতো ফ্রি ফায়ার গেমস খেলার দোকান গড়ে উঠেছে। প্রত্যেক দোকানে ২৫-৩০ টি মোবাইল রয়েছে। ফ্রি ফায়ার গেমস খেলার জন্য এসব মোবাইল ঘণ্টা অথবা প্রতি গেম হিসাবে ভাড়া দেওয়া হয়। অনেক শিক্ষার্থী খেলার টাকা জোগাড় করতে না পেরে বাসা থেকে টাকা চুরি করছে। জাম-কাপড় কেনার কথা বলে টাকা দিয়ে ফ্রি ফায়ার গেমস খেলে। এ জন্য মাঝেমধ্যে ভুক্তভোগী পরিবার ও ভিডিও গেমস দোকান মালিকরা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছেন। অনেক সময় হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) বাউনিয়াবাঁধ এলাকার ভিডিও গেমসের দোকান মালিক জুলহাসের সঙ্গে এক ভুক্তভোগী পরিবারের বাকবিতণ্ডা হয়।
এলাকাবাসীরা বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ফ্রি ফায়ার গেমেসের প্রতি আসক্তি জন্মেছে। এ জন্য তারা যত্রতত্র গড়ে ওঠা ভিডিও গেমসের দোকানকে দায়ী করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাউনিয়াবাঁধ আইডিয়াল হাইস্কুলের এক শিক্ষক বলেন, মোবইলের গেমস খেলার দোকান বন্ধ না হলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত অন্ধকার। অনেকে প্রাইভেট পড়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। অথচ সেখানে না গিয়ে দোকানে মোবাইলে গেমস খেলে। স্কুল বন্ধ থাকায় বাচ্চাদেরও ঠিকমতো শাসন করতে পারছি না। অভিভাবকরা সতর্ক না হলে মোবাইলে গেমস খেলার আসক্তির কারণে তাদের মস্তিষ্ক ও চোখে বিরাট প্রভাব ফেলবে।
ভুক্তভোগী এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জাহিদ বলেন, আমার সন্তান ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। স্কুল বন্ধ থাকায় এলাকায় গড়ে উঠে ফ্রি ফায়ার গেমসের দোকান। সেখানে সারাক্ষণ টাকা দিয়ে গেমস খেলে। বাসার আলমারি থেকে টাকা নিয়ে গেমসের দোকানে যায়। দোকানদারকে নিষেধ করলে বলে আমি কি আপনার সন্তানকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আসছি। চারদিকে গেমসের দোকানের ছড়াছড়ি। ছেলেকে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। দোকানগুলো বন্ধ থাকলে আমরা অভিভাবকরা উপকৃত হতাম। প্রয়োজনে আপনারা রাতে এসে দেখতে পারেন কিভাবে বাচ্চারা গেমস খেলে সময় নষ্ট করছে।
এছাড়াও অনেকে অন্য ব্যবসার আড়ালে ভিডিও গেমসের ব্যবসা করছেন। এ জন্য তারা ভিডিও গেমসের দোকানের সামনে মুদি, স্টেশনরি কিংবা জামা-কাপড় আয়রন করার মালামাল রেখেছেন। যাতে বাইর থেকে দেখে কেউ বুঝতে না পারে ভেতরে মোবাাইলের গেমস চলছে।
পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ ইসলাম বলেন, কোন কোন এলাকায় খেলা হয়, ঠিকানা দেন। ব্যবস্থা নিচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ০১১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২১
এমএমআই/এমএমএস