ঢাকা, শনিবার, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

দেশে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রমে শীর্ষে আড়াইহাজার 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২১
দেশে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রমে শীর্ষে আড়াইহাজার 

নারায়ণগঞ্জ: জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রমে সাফল্য অর্জন করেছে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা। জুন ও জুলাই মাসের সার্বিক ফলাফলে আড়াইহাজারে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে।

শুক্রবার (১৩ আগস্ট) নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের বর্তমান জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ এ জেলায় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের নারায়ণগঞ্জ মডেল চালু করেন। এ মডেলের আওতায় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের তথ্য ও প্রয়োজনীয় কাগজ সংগ্রহ করে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নিজ উদ্যোগে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সম্পন্ন করে সনদ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।
এ ধারাবাহিকতায় গত জুলাই মাসে শুধু আড়াইহাজার উপজেলায় ১ হাজার ৯২৬টি জন্ম নিবন্ধন সনদ ও ১১৮টি মৃত্যু নিবন্ধন সনদ মানুষের বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে ‘নারায়ণগঞ্জ মডেল’ একটি পরীক্ষিত ও কার্যকরী মডেল, এর মাধ্যমে আমরা জনসংখ্যার সঠিক তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে কার্যকরী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবো।

তিনি বলেন, সঠিকভাবে জন্ম নিবন্ধন অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। জনকল্যাণমুখী নীতিমালা প্রণয়ন এবং সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিধি মোতাবেক সঠিক জন্ম তারিখসহ একটি জন্ম সনদ নাগরিকের জন্য অপরিহার্য। সঠিক জন্ম তারিখসহ জন্মসনদ একজন মানুষের রাষ্ট্রীয় অধিকার এবং নাগরিক হিসেবে অত্যন্ত সম্মানের একটি দলিল। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ (২০০৪ সনের ২৯ নম্বর আইন) এ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনকে সার্বজনীন ঘোষণা করে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী, লিঙ্গ নির্বিশেষে সবার জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিবন্ধকের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

আরও জানা যায়, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে সারাদেশের চিত্র আশাব্যঞ্জক নয়। নারায়ণগঞ্জের অবস্থা আরও নাজুক ছিল। ২০২০ সালের ডিসেম্বরের আগেও নারায়ণগঞ্জের  জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধনের হার ছিল দুই শতাংশ এবং মৃত্যু নিবন্ধনের হার ছিল শূন্য দশমিক সাত শতাংশ এবং এক বছরের মধ্যে এ হার ছিল ১৩ শতাংশ ও শূন্য এক শতাংশের কম।

বর্তমান জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ এ জেলায় যোগদানের পরেই জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কাজে গ্রাম পুলিশদের কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি নারায়ণগঞ্জে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের ‘নারায়ণগঞ্জ মডেল’ চালু করেন। এ মডেলের আওতায় নারায়ণগঞ্জের সব উপজেলায় গ্রাম পুলিশের সব শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এছাড়া গ্রাম পুলিশদের ১০ দিনের প্রশিক্ষণ ও সবাইকে বাইসাইকেল দেওয়া হয়।  

পৌরসভায় এ কাজের জন্য তাদের কর্মচারীদের মধ্য থেকে নয় ওয়ার্ডের নয় জনকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদেরও একইভাবে প্রশিক্ষণ ও বাইসাইকেল সরবরাহ করা হয়। এসব সদস্যরা প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে রেজিস্ট্রারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের তথ্য ও প্রয়োজনীয় কাগজ সংগ্রহ করে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদগুলো নিজ উদ্যোগে জন্ম এবং মৃত্যু নিবন্ধন সম্পন্ন করে সনদ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহাগ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের ‘নারায়ণগঞ্জ মডেল’ বাস্তবায়নে সংসদ সদস্য, পৌরসভার মেয়র-ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিব, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সভা করে লক্ষ্য অর্জনে কাজের পরিকল্পনা নির্ধারণ করি। গ্রাম পুলিশ ও পৌরসভার নির্বাচিত কর্মচারীদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে নিবন্ধন সম্পন্ন করে সনদ বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছি। আমরা সবার সহযোগিতায় সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুর অভিভাবকদের অভিনন্দন বার্তা, মৃত্যুবরণকারী পরিবারের সদস্যদের শোকবার্তা দিয়ে থাকি। চলতি মাসেই আমরা জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে নবজাতক শিশুদের জন্য বেবি ডায়পার সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছি।  

তিনি বলেন, মূলত, এ অর্জন টিম আড়াইহাজারের, সবার সম্মিলিত প্রয়াসে আমরা সামনের দিনে জনগণকে কাঙ্ক্ষিত সেবা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করে যাবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২১
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।