ঢাকা, শনিবার, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

পদ্মা সেতুতে ফেরির ধাক্কা, দানা বাঁধছে সন্দেহ

শামীম খান, স্পোল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২১
পদ্মা সেতুতে ফেরির ধাক্কা, দানা বাঁধছে সন্দেহ

ঢাকা: পদ্মা সেতুর পিলারে বার বার ফেরির ধাক্কা প্রাথমিকভাবে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা বলে মনে করছে সরকার। তবে এই উদাসীনতার পেছনে ষড়যন্ত্র বা অন্য কিছু লুকিয়ে আছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সরকারের ভেতরেই।

 

নির্মাণাধীন পদ্মা  সেতুর পিলারে ইতোমধ্যে তিন দফায় ফেরির ধাক্কা লেগেছে। সবশেষ শুক্রবার (১৩ আগস্ট) সকালে একটি ফেরি পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয়। এর আগে গত ৯ আগস্ট আরেকটি ফেরি এই ১০ নম্বর পিলারেই ধাক্কা দিয়েছিলো। এর আগে গত ২৩ জুলাই একটি ফেরি পদ্মা সেতুর ৭ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয়।

গত ২৩ জুলাই ৭ নম্বর পিলারে যে ফেরিটি আঘাত করেছিলো, সেটির ওজন ছিলো ১২ শ’ ৮৪ টন। আর পদ্মা  সেতুর ডিজাইন অনুযায়ী ৩০ নটিক্যাল মাইল গতিতে ৪ হাজার টন ওজনের নৌ-যানের ধাক্কা সামলানোর ক্যাপাসিটি রয়েছে এই সেতুর প্রতিটি পিলারের। এ ক্ষেত্রে যে গতি এবং ওজনের ফেরি ধাক্কা দিয়েছে তাতে পদ্মা সেতুর পিলারের ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে বার বার কেন একই ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কি না সেটাও সামনে চলে এসেছে।

এই ঘটনার জন্য প্রাথমিকভাবে চালকসহ ফেরি পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা, পেশাদারিত্বের দুর্বলতা, অদক্ষতা, সরকারের নির্দেশের প্রতি গুরুত্ব না দেওয়াকে দায়ী করা হচ্ছে। তবে এর পাশাপাশি এই উদাসীনতা ও সরকারের নির্দেশনায় গুরুত্ব না দেওয়ার পেছনে ষড়যন্ত্র বা অন্য কোনো কিছু থাকতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।

শুক্রবার সকালে পদ্মা সেতুর পিলারে তৃতীয় বারের মতো ফেরির ধাক্কার ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এ সময় বিষয়টি নিয়ে তিনি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ সময় প্রতিমন্ত্রীর কাছে এই উদাসীনতা, পেশাদারিত্বের দুর্বলতা, অদক্ষতা, সরকারের নির্দেশের প্রতি গুরুত্ব না দেওয়ার বিষয়গুলো ধরা পড়েছে। এই উদাসীনতা ও সরকারের নির্দেশনায় গুরুত্ব না দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে খালিদ মাহমুদ চৌধুরীও সন্দেহ পোষণ করছেন বলে তিনি বাংলানিউজকে জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার রাতেই সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলেও তিনি জানান।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের পেশাদারিত্বের অভাব, দুর্বলতা, উদাসীনতা আছে। এ কারণে বার বার এ ঘটনা ঘটছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নেও তারা সিরিয়াস না। ফেরি পরিচালনর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যতটা সিরিয়াস হওয়া দরকার ততটা দেখলাম না। এই উদাসীনতার পেছনে অন্য কিছু লুকিয়ে আছে কি না যেটা এখন মানুষের মনে উদয় হচ্ছে, সেটা আমরা তদন্ত করে দেখছি।

গত ২৩ জুলাই প্রথম পদ্মা সেতুর পিলারে ফেরির ধাক্কা লাগার পর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও বিষয়টি সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। গত ২৫ জুলাই এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এটি নিছক কোনো দুর্ঘটনা নাকি উদ্দেশ্যমূলক ষড়যন্ত্রের অংশ, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।  

দ্বিতীয় দফায় ধাক্কা লাগার পর গত ১২ আগস্ট তিনি এক অনুষ্ঠানে বলেন, অদক্ষতার জন্য চালকের শাস্তি দিলেন, চাকরিচ্যুত করলেন। চালকের অদক্ষতা না কি অন্তর্ঘাত তা খতিয়ে দেখতে হবে। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই বার বার এ ঘটনা কেন ঘটবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। এই প্রকল্প নিয়ে ষড়যন্ত্র ছিলো, তা এখনও শেষ হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২১
এসকে/নিউজ ডেস্ক 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।