মাগুরা: মাগুরা জেলায় রয়েছে অসংখ্য নদী-নালা, খাল-বিল। জেলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কুমার, ফটকি, গড়াই, মধুমতি, চিত্রা, নবগঙ্গা নদী।
মাগুরা সদর উপজেলার কুচিয়ামুড়া বুড়োল বিল এক সময় দেশি মাছের জন্য বিখ্যাত ছিল। আগে বর্ষা মৌসুমে এখানে যে পরিমাণ মাছ পাওয়া যেতো, চলতি মৌসুমে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। বিলের জমিগুলোতে অতিরিক্ত সারপ্রয়োগ, বর্ষা মৌসুমে মা মাছ নিধন, অভয়াশ্রমের অভাব ও সংরক্ষণে সরকারি–বেসরকারি কোনো উদ্যোগ না থাকায় এ বিল থেকে দেশি মাছ কমে যাচ্ছে।
হাটবাজারগুলোতে চাহিদার তুলানায় মাছের সরবরাহ কম থাকায় মাছের দাম আকাশ ছোঁয়া।
কুচিয়ামুড়া গ্রামের বাসিন্দা নিবারন সরকার বলেন, বৃষ্টি হলেই বাজারে মাছ আসতে শুরু করে। চলতি মৌসুমে আশানুরূপ বৃষ্টি হয়েছে। বিলে প্রচুর পানি জমেছে। বর্ষা প্রায় শেষ প্রান্তে এলেও বাজারে দেশি মাছের দেখা মিলছে না।
তিনি আরও বলেন, এক সময় জলাশয়গুলোতে ও বুড়োল বিলে মাগুর, কৈ, টেংরা, পুঁটি, বাঘাইড়, টাকি, গুঁচি, চ্যাং, বোয়াল, বালিয়া, সরপুঁটি, বাইমসহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। আর এখন দেশি মাছ বুড়োল বিলে পাওয়াই যায় না।
এদিকে সচেতন মহল মনে করছেন, এসব মাছকে সচেতনতার মাধ্যমে ধরে রাখতে না পারলে মাগুরা বুড়োল বিলের দেশি মাছের কথা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে রূপকথার গল্পের মত মনে হবে। তাই সবাইকে দেশি মাছ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে বলে উল্লেখ করেন তারা।
মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজর বাংলা বিভাগের প্রভাষক রিপন হোসেন বলেন, নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ। এই দেশে প্রচুর নদী, খাল, বিল রয়েছে। আগে বাজারগুলোতে দেশি মাছের আমদানি থাকলেও এখন তা নেই। মৎস্যজীবীরা নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশি মাছ আহরণ কারায় তা এখন বিলুপ্তির পথে।
মাগুরা জেলা মৎস্য কর্মকতা মো. আনোয়ারুল কবির বলেন, দিন দিন দেশি প্রজাতির মাছ কমে যাচ্ছে। জেলা মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আড়বাঁধ, কারেন্ট জাল ইত্যাদি পুড়িয়ে দেওয়া হয়, জরিমানা করা হয়। তারপরও মানুষ সচেতন হচ্ছে না। জনসচেতনা বৃদ্ধি করতে না পারলে দেশি প্রজাতির মাছ রক্ষা করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২১
কেএআর