ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম এবং তার স্ত্রী মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক শাহিন আনাম হিন্দু ধর্ম আইনের সংস্কার চেয়ে যে প্রচারণা চালাচ্ছেন সেটি ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস।
তিনি বলেন, এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত আন্তর্জাতিক কয়েকটি এনজিও।
আজ রবিবার সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। হিন্দু ধর্মীয় আইন পরিবর্তন প্রচেষ্টার প্রতিবাদে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন।
অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বলেন, সনাতন আইনের কোনো সংস্কার অথবা পরিবর্তন প্রয়োজন নেই। আজকে যারা এই আইনের সংস্কার চায় তারা হিন্দু ধর্মকে অবমাননা করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, হিন্দু ধর্মকে নেতৃত্বশূন্য করার জন্য তারা এই পাঁয়তারা করছেন। মাহফুজ আনামরা ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন সনাতন ধর্ম নিয়ে। তারা যে বলেন হিন্দু ধর্মে নারীদেরকে সম্পদ দেওয়া হয় না, এ কথা সত্য নয়। তাদের এসব কথা শুনে অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন। আমরা এসব বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহ্বান জানাই। তারা সরকার এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদেরকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, মাহফুজ আনাম ও তার স্ত্রীর আচরণে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অত্যন্ত ব্যথিত। শাহিন আনাম এনজিওর এজেন্ডা বাস্তবায়নে মাহফুজ আনাম সম্পাদিত ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারকে কাজে লাগিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা এর জোর প্রতিবাদ জানাই।
মাহফুজ আনাম ও শাহিন আনামের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক প্রতিভা বাগচী বলেন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনসহ কয়েকটি এনজিও হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা সুসংহত হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে অশান্তির বীজ বপন করছে। ১০ হাজার বছরের পুরনো এই হিন্দু পরিবার ব্যবস্থা ধ্বংস করে বাংলাদেশকে হিন্দুশূন্য করার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে চক্রটি। তাদের দূরভিসন্ধি হাসিলে হিন্দু আইন সংস্কারের জন্য আইন কমিশনে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছে। যার নেতৃত্বে আছেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক শাহীন আনাম ও তাঁর স্বামী মাহফুজ আনাম সিন্ডিকেট।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি বিধান বিহারী গোস্বামী, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিক, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী প্রতিভা বাগচী, হিন্দু আইন সংশোধন প্রতিরোধ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জেকে পাল, হিন্দু আইন সংশোধন প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়া ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট লাকী বাছার, প্রণব মঠ ঢাকার অধ্যক্ষ স্বামী সঙ্গীতানন্দ মহারাজ, ব্রাহ্মণ সংসদের মহাসচিব বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, ইসকনের পরিচালক ফুড ফর লাইফ রূপানুগ গৌরদাস ব্রহ্মচারী, সৎসংঘ বাংলাদেশের সভাপতি ড. রবীন্দ্রনাথ সরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক ও সনাতন বিদ্যার্থী পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তী, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সহদেব বৈদ্য, হরিগুরু সেবা সংঘের সভাপতি নির্মল ঠাকুর, সনাতন ল’ ইয়ার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শঙ্কর দাস, বাংলাদেশ সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক লায়ন বিমল শীল, বৈদিক সমাজ বাংলাদেশের সভাপতি স্বামী চিদানন্দ সরস্বতী, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন মিশ্র, বৈদিক কৃষ্টি সংরক্ষণ প্রক্রিয়ার সভাপতি রবীন্দ্রনাথ দেবনাথ, ওয়ার্ল্ড হিন্দু ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপেন মিত্র, বাংলাদেশ ব্রাহ্মন সংসদের মহাসচিব মনঞ্জয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ হিন্দু লীগের সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোরঞ্জন ঘোষাল, শ্রীগুরু সংঘের সাধারণ সম্পাদক মনঞ্জয় কৃষ্ণ দত্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত ও পালি বিভাগের প্রধান নিরঞ্জণ অধিকারী।