ঢাকা, শুক্রবার, ১২ আশ্বিন ১৪৩১, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সিনহা হত্যা: মামলা পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২১
সিনহা হত্যা: মামলা পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ

কক্সবাজার: অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলা পরিচালনায় আসামি পক্ষের আইনজীবীরা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।

সোমবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে সাক্ষ্য গ্রহণের প্রথম দিনে আদালতের কার্যক্রম শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ অভিযোগ করেন।

 

তিনি জানান, মামলার শুরু থেকেই আসামি পক্ষের আইনজীবীরা আদালতে দরখাস্ত দিয়ে মামলার কার্যক্রম বিলম্বিত করার চেষ্টা করে আসছেন। সাক্ষ্য গ্রহণের প্রথম দিন আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত ১১টি দরখাস্ত দিয়ে মামলা স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। আদালত এসব দরখাস্ত গ্রহণ করেননি।

একই অভিযোগ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।  

তিনি বলেন, সাক্ষ্য গ্রহণের প্রথম দিন মামলার বাদী মেজর (অব.) সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া সাক্ষ্য দিয়েছেন। ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর পক্ষে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) জেরা করা হবে। সে পর্যন্ত আদালত মূলতবি ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার জেরা শেষে অন্যান্য সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে।  
মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস সাংবাদিকদের বলেন, আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছি। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা আমাকে জেরা করেছেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের একটাই দাবি, এ মামলায় যারা আসামি তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি যেন নিশ্চিত করা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণের নির্ধারিত তিন দিনের প্রথম দিনে সোমবার (২৩ আগস্ট) সকাল ১০টায় নিহত মেজর (অব.) সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে সিনহা হত্যা মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। প্রথম দিন সকাল সোয়া ১০টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বাদী আদালতে জবানবন্দি দেন এবং ১৩ আসামির আইনজীবী তাকে জেরা করেন। এর আগে সকাল ১০টায় এ মামলার সব আসামিদের আদালতে আনা হয়।  

মামলায় মোট ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদীসহ এক থেকে ১৫ নম্বর সাক্ষীর এদিন আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল। এ মামলায় অভিযুক্ত ১৫ আসামি কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন।

এর আগে গত জুলাই মাসের ২৬, ২৭ ও ২৮ তারিখ এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল।  

২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিনের মাথায় ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত ও টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপসহ নয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব-১৫। হত্যাকাণ্ডের পর চার মাসের বেশি সময় তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে এবং ৮৩ জনকে সাক্ষী করে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। চার্জশিটভুক্ত ১৫ জন আসামি কারাগারে রয়েছেন। এরমধ্যে বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাস, কনস্টেবল সাগর দেব ও রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মামলায় অভিযুক্ত ও কারাগারে আটক থাকা ১৫ আসামি হলেন, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন বরখাস্ত পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, কনস্টেবল রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এএসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাগর দেব, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২১
এসবি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।