কক্সবাজার: চাঞ্চল্যকর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার দ্বিতীয় দিনের মত সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ঈসমাইলের আদালতে এ কার্যক্রম শুরু হয়।
সোমবার (২৩ আগস্ট) শুরু হওয়া এ মামলাার সাক্ষ্যগ্রহণ টানা তিনদিন অর্থাৎ বুধবার (২৫ আগস্ট) পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম। এ তিনদিনে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য মামলার ৮৩ সাক্ষীর মধ্যে বাদীসহ ১৫ জনকে সমন জারি করা হয়েছে।
পিপি ফরিদ বলেন, মামলায় মোট ৮৩ জন সাক্ষী রয়েছেন। প্রথমদিন মামলার বাদী সিনহার বড় বোন শারমিন ফেরদৌসের সাক্ষ্য ও জেরা আংশিক শেষ হয়েছে। সাক্ষ্য দেওয়ার সময় ওসি প্রদীপ-লিয়াকতসহ মামলার ১৫ আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার আসামি লিয়াকত আলী, প্রদীপ কুমার দাস ও লিটন মিয়ার পক্ষের আইনজীবী বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসকে জেরা করবেন।
এর আগে গত মাসের (জুলাই) ২৬, ২৭ ও ২৮ তারিখ এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারিত ছিল। কিন্তু করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকারঘোষিত লকডাউনের কারণে হাইকোর্টের নির্দেশে সারাদেশের মতো কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সে সময় চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা যায়নি।
জানা যায়, বিগত ২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান।
হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিনের মাথায় ৫ আগস্ট নিহতের বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত ও টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপসহ ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব-১৫।
এরপর চার মাসের বেশি সময় তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে এবং ৮৩ জনকে সাক্ষী করে আলোচিত এ মামলার চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম।
চার্জশিটভুক্ত ১৫ জন আসামি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। এর মধ্যে বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাস, কনস্টেবল সাগর দেব ও রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলায় অভিযুক্ত ও কারাগারে থাকা ১৫ আসামিরা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির বরখাস্ত পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, কনস্টেবল রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এএসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাগর দেব, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ এবং পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২১
এসবি/আরএ