ঢাকা, শনিবার, ০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

১৫ আগস্ট অনেকে সঠিক ভূমিকা রাখেনি: শেখ হাসিনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২১
১৫ আগস্ট অনেকে সঠিক ভূমিকা রাখেনি: শেখ হাসিনা

ঢাকা: কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আক্রমণ হলে বঙ্গবন্ধু সবাইকে ফোন করেন। কিন্তু যার যার ভূমিকা তারা তা সঠিকভাবে করেনি।

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ (উত্তর) ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ (দক্ষিণ) আয়োজিত আলোচনা সভায় (ভার্চ্যুয়াল) এ কথা বলেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ অন্যায় কখনো আল্লাহও মেনে নেয় না, বাংলাদেশের মানুষও মানেনি। হ্যাঁ সেদিন বাংলাদেশে এটা ঠিক যে এ রকম একটা ঘটনার পর আমাদের দল, সমর্থক, মুক্তিযোদ্ধাদের যে ভূমিকা ছিল তা হয়তো তারা করতে পারেনি। '

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিন্তু এটা আপনারা জানেন যে যখনই বাড়ি আক্রমণ শুরু হয়... আমাদের বাসায় যখন গুলি শুরু হয় বঙ্গবন্ধু কিন্তু সবাইকে ফোন করেছিলেন। আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে কথা হয়, তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে কথা হয়, সেনাপ্রধান শফিউল্লাহর সঙ্গে কথা হয়, সেনাবাহিনীরও যার যার ভূমিকা ছিল তারাও কিন্তু সঠিকভাবে করেনি। এর পেছনে রহস্যটা কী সেটাই কথা। ’

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা যেদিন থেকে বাংলার মাটিতে পা রাখলেন সেদিন থেকে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার শুরু করলো। বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ধ্বংস করা, চেতনাকে ধ্বংস করা, স্বাধীনতার আর্দশকে নস্যাৎ করা এটাই ছিল এদের লক্ষ্য। ’

‘কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় আমাদের দলের ভেতরে, আমার বাবার মন্ত্রী সভার সদস্য খন্দকার মোশতাকসহ যারা জড়িত ছিল, আর তাদেরই মূল শক্তি ছিল...জিয়াউর রহমানকে খন্দকার মোশতাক তার দোসর হিসেবে পেয়েছিল। সেই ছিল তার (মোশতাক) মূল শক্তি। মোশতাক, জিয়া মিলেই কিন্তু এ (১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা) চক্রান্তটা করেছে। ’

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সে কখনো বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস করতো না, স্বাধীনতায় বিশ্বাস করতো না। ’

জিয়াউর রহমান অস্ত্র হাতে সরাসরি যুদ্ধ করেননি বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘যারা ষড়যন্ত্রকারী, চক্রান্তকারী যে উদ্দেশ্য নিয়ে তারা ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করেছে…তাদের উদ্দেশ্য তো ছিল বাংলাদেশ ফেইল্ড রাষ্ট্র (ব্যর্থ রাষ্ট্র) হোক, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনটা ব্যর্থ হোক, স্বাধীনতার আদর্শগুলো ধ্বংস হয়ে যাক… সেটা করতে দেব না। যে নাম তারা মুছে ফেলেছিল, আজকে আল্লাহর রহমতে সেটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এখন আর কেউ তা মুছতে পারবে না। ’

আওয়ামী লীগ ও গোটা বাংলাদেশকে নিজের পরিবার হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাবা, মা, ভাই-বোন সব হারিয়ে যেদিন বাংলার মাটিতে পা দিলাম, আমাকেও তো আসতে অনেক বাধা দিয়েছে। তারপরও জোর করে যখন আসলাম, হ্যাঁ, আমি সেই চেনামুখগুলো পাইনি। বরং দেশে এসে আমি কবর পেলাম। তখন আমি পেয়েছি লাখো মানুষ আর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, তাদের ভালোবাসা, তাদের আস্থা, বিশ্বাস। এজন্য আমি বলতে পারি আওয়ামী লীগ আমার পরিবার। বাংলাদেশটাই আমার পরিবার। ’

তিনি বলেন, ‘আমি সেইভাবেই বাংলাদেশের মানুষকে দেখি। আমি যেটুকু কাজ করতে পারবো মনে হয় আমার আব্বা, আম্মা তারা দেখবে, নিশ্চয়ই দেখবে, দেখেন। হয়তো তাদের আত্মাটা শান্তি পাবে। আমি সেই চিন্তা করেই সব কাজ করি। এজন্য আমার কোনো মৃত্যুভয়ও নেই, কোনো আকাঙ্ক্ষাও নেই, কোনো চাওয়া-পাওয়ারও কিছু নেই। আমার জন্য আমি কিছু করবো? করতেও চাই না। ’

মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে শুধু কথা বলে যাওয়া লোকদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে করোনার সময়ে কারা মানুষের পাশে আছে? আর কত দল শুধু বিবৃতি, বক্তব্যই দিয়ে যাচ্ছে। ...একটা অবাধ সুযোগ আছে সবার কথা বলার। কথা বলেই যাচ্ছে। কিন্তু মাঠে কয়টা মানুষ আছে? মানুষের পাশে কে আছে? দুঃসময়ে কে দাঁড়াচ্ছে? আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই দাঁড়াচ্ছে। ’

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচির সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২১, আপডেট: ১৭১২ ঘণ্টা
এমইউএম/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।