ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ঢামেকে টাকা নিয়ে অস্ত্রোপচার করার অভিযোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২১
ঢামেকে টাকা নিয়ে অস্ত্রোপচার করার অভিযোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

ঢাকা: ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা নিয়ে অস্ত্রোপচার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে হাসপাতালটির নিউরোসার্জারি বিভাগের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।  

এ ঘটনায় হাসপাতালটির পরিচালক বরাবর অভিযোগ দেবে বলে জানালেও শিশুটির পরবর্তী চিকিৎসার কথা চিন্তা করে ঘটনাটি নিয়ে আর আগাতে চাচ্ছেন না স্বজনরা।

 

ঢাকার পাশে কেরানীগঞ্জের আটিবাজার এলাকার খোরশেদ আলমের মেয়ে নাজিফা আক্তার (৪)। দুই বোনের মধ্যে ছোট নাজিফা।  

গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে নিজেদের এক তলা বাড়ির ছাদে খেলার সময় নিচে পড়ে যায় শিশুটি। গুরুতর আহত শিশুটিকে সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি ক্লিনিকে। সেখান থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে, পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

সোমবার (৩০ আগস্ট) শিশুটির বাবা মোটর পার্টস ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম বলেন, গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে মেয়েকে নিয়ে ঢাকা মেডিক্যালে আসি। এখানে আসার পর নিউরোসার্জারি বিভাগের ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা তাকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে মাথার সিটিস্ক্যান করতে বলেন। সিটিস্ক্যান রিপোর্ট দেখার পর চিকিৎসকরা তাকে ২০৪ নাম্বার ওয়ার্ডে ভর্তি রাখেন। রাত ৮টার দিকে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হবে বলে জানান তারা। এরপর নিউরোসার্জারি বিভাগের এক চিকিৎসক আমাদের জানান, অপারেশন করতে একটি মেশিন প্রয়োজন। সেটি হাসপাতালে সরবরাহ নেই। এটি কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা লাগবে।

তিনি বলেন, এটি শুনার পর আমি আমার এক ভাইকে ফোন দিয়ে টাকা সহ হাসপাতালে আসতে বলি। সে আসার পর আবার ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে ২ হাজার টাকা কমিয়ে ৮ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এরপর তিনি আমাদের একটি ভাউচারও দেন। রাত ৩টার দিকে হাসপাতালের ১০৫ নাম্বার জরুরি বিভাগের অস্ত্রোপচার কক্ষে মেয়ের অপারেশন করেন ওই চিকিৎসক। পরে সেখানে তাকে অবজারভেশনে রেখে আজ বেলা ১১টার দিকে আবার ২০৪ নম্বর ওয়ার্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে মেয়ে সেখানেই ভর্তি রয়েছে।

শিশুটির বাবা বলেন, আমরা যখন জানতে পারলাম হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের জন্য কোনো টাকা লাগে না তখন ওই চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি বলেন, আমাদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেননি তিনি। তবে তিনি যে আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তার ভাউচারও আছে আমাদের কাছে, সেটিও অস্বীকার করছেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে ওই চিকিৎসকের মোবাইলে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. অসিত চন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এক চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের একটু সমস্যা হয়েছে। সে বিষয়টি আমাকে ফোন দিয়ে জানিয়েছে হাসপাতাল থেকে। আগামীকাল গিয়ে বিস্তারিত জেনে বলতে পারবো আসলে ঘটনাটা কি?

ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুটা শুনেছি। বিষয়টি আমার নজরে আছে। আজকে অফিস বন্ধ, আগামীকাল অফিসে গিয়ে বিষয়টি দেখবো। অভিযোগ দেওয়া ব্যক্তির কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ নেব। যদি কোনো অনিয়ম পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

এর আগেও ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ঘটনায় পরিচালক বরাবর লিখিত দিয়েছিলেন ভুক্তভোগীরা। সে বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিলো জানতে চাইলে পরিচালক বলেন, সেই ঘটনায় আমি দুই পক্ষকেই ডেকে তাদের কথাগুলো শুনেছি। এরপর ওই চিকিৎসককে সংশোধন হতে বলি। এছাড়া পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে যেন কোনো অভিযোগ না আসে সে বিষয়ে সতর্কও করা হয়েছিলো। তারপরও আজ এই ঘটনা। লিখিত নিয়ে যাচাই বাচাই করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০০, ২০২১
এজেডএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।