ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কুড়িগ্রামে পানির নিচে ২৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০২১
কুড়িগ্রামে পানির নিচে ২৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল ছবি: বাংলানিউজ

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার ২ শতাধিক চর ও দ্বীপ চরের অন্তত ৭৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ২৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল।

বৃহস্পতিবার (০২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পেয়ে চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ধরলার পানি কিছুটা কমলেও সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

ফলে ধরলা অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার কুড়িগ্রাম সদর উপজেলাসহ চিলমারী, উলিপুর, রৌমারী, রাজিবপুর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পেয়ে চিলমারী ও উলিপুর উপজেলার দুই শতাধিক চর ও দ্বীপ চর প্লাবিত হয়ে প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি জীবন-যাপন করছে। যাতায়াতের দুর্ভোগে বেড়েছে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজনের। চরাঞ্চলগুলোর গ্রামীণ রাস্তা পানিতে তলিয়ে থাকায় নৌকা বা কলাগাছের ভেলাই একমাত্র ভরসা পানিবন্দি মানুষদের। হাতে কাজ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন তারা। পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে রোপা আমন, সবজি ক্ষেত ও বীজতলা।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের কৃষক নাজমুল ইসলাম ও খলিল মিয়া বাংলানিউজকে জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ সময়ে বন্যা দেখা দেওয়ায় ফসল ও সবজির মারাত্মক ক্ষতি হয়ে গেল। ১০/১২ দিন ধরে রোপা আমন ক্ষেত ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে।

ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের হাতিয়ার চর গ্রামের কুদরত উল্লাহ জানান, বাড়ির চারিদিকে পানি ওঠায় ৭/৮ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছি। কাজকর্ম না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে আছি। এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাইনি।

হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পানিবন্দি পরিবার মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বন্যার্তদের জন্য চাল বরাদ্দ পেয়েছি, যা শুক্রবার বিতরণ করা হবে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুরুল হক বাংলানিউজকে জানান, বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে প্রায় ২৩ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির রোপা আমন, ২৮৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন সবজি ক্ষেত ও ১১৫ হেক্টর জমির বীজতলা।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ধরলা ও তিস্তার পানি কিছুটা কমলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পেয়ে চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বাংলানিউজকে জানান, বন্যার্তদের জন্য ২৮০ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০২১
এফইএস/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।