ঢাকা, রবিবার, ২৬ মাঘ ১৪৩১, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

‘দরিদ্র হয়ে জন্ম নেওয়া অপরাধ নয়, কিন্তু দরিদ্র হয়ে বেঁচে থাকা অভিশাপ’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২১
‘দরিদ্র হয়ে জন্ম নেওয়া অপরাধ নয়, কিন্তু দরিদ্র হয়ে বেঁচে থাকা অভিশাপ’

ঢাকা: দরিদ্র হয়ে জন্ম নেওয়া অপরাধ নয়, কিন্তু দরিদ্র হয়ে বেঁচে থাকা অভিশাপ বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৃহস্পতিবার (০২ সেপ্টেম্বর)  অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সুজাইজার‌ল্যান্ডের জেনেভার জাতিসংঘ কার্যালয়ে এক সম্মেলনের প্রস্তুতির জন্য উচ্চ পর্যায়ের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল পর্যালোচনা সভায় যোগ দিয়ে সমাপনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেব, এলডিসি বা স্বল্পন্নোতের তকমা কখনোই সম্মানের হতে পারেন। দরিদ্র হয়ে জন্ম নেওয়া অপরাধ নয়, কিন্তু দরিদ্র হয়ে বেচে থাকা এবং মারা যাওয়া অভিশাপ। কেননা আমাদের রয়েছে দারিদ্রতা থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা। জন্মগতভাবে আমরা সবাই সমান নই কিন্তু আমাদের অবস্থার উন্নতির জন্য রয়েছে এক বা ভিন্ন ভিন্ন রকমের সুযোগ ও সক্ষমতা। আমরা যদি একটু পেছনে ফিরে তাকাই, বিশেষ করে ২০০ বছর পূর্বেও দেখি, আজকের উন্নত দেশগুলো বর্তমান অবস্থাতে ছিল না। তাদের এখনকার সুযোগ সুবিধাগুলো তখন তাদের ছিল না। তখন দরিদ্র এবং দরিদ্র নয় এমন অবস্থা ছিলা ৮০ এবং ২০ অনুপাতে, আর এখন এটি সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থায় বিরাজমান। কেউ যদি তার পরিস্থিতি পরিবর্তনের চেষ্টা না করে, তাহলে কেউই তাকে দারিদ্র্যতা থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করবে না। আর যদি সত্যিই অবস্থার পরিবর্তন করতে চায়, অবশ্যিই সফলতা আসবে।
 
বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, পৃথিবী বিখ্যাত স্বনামধন্য নেতা বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন- কারো মুখাপেক্ষী হয়ে নয় বরং নিজেদেরকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে উন্নতি করতে হয়। আমাদের জাতির পিতার রক্তের সুযোগ্য উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই নীতিতে বিশ্বাস করেন। তার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত এক দশকে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্মুখীন হয়েছে এবং ইতোমধ্যে এলডিসি থেকে উত্তরনের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, ইস্তাম্বুল কর্মসূচির মেয়াদ (২০১১-২০২০) শেষেও ২০২০ সালের মধ্যে এলডিসির সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার লক্ষ্য পূরণ হয়নি। মাত্র চারটি দেশ উত্তরণ লাভ করেছে এবং বাকি পাঁচটি উত্তরণের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

সব প্রতিনিধিদের উদাত্ত আহ্বান করে  অর্থমন্ত্রী বলেন, কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক পরিবর্তনে সবাইকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। সব জাতিতে জাতিতে বিভেদ নিরসনে সব উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশকে পারস্পারিক আন্তরিক সহযোগীর হাত প্রসারিত করতে হবে । কাউকে পেছনে ফেলে নয়, সবাইকে একসঙ্গে নিয়েই উপরে উঠতে হবে। পরিশেষে,  অর্থমন্ত্রী ২০২২ সালের জানুয়ারিতে কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিতব্য পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনকে অত্যন্ত ফলপ্রসু করতে সবাইকে আহ্বান জানান।

সভায় মালাউয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আইজেনহাওয়ার মকাকা, আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও হাই রিপ্রেজেনটেটিভ এবং জাতিসংঘের ৫ম এলডিসি সম্মেলনের মহাসচিব কোর্টনি রাট্রে এবং আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল এবং ইএসক্যাপের নির্বাহী সচিব, মিসেস আর্মিদা সালসিয়া আলিসজাহবানসহ আরো বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বক্তব্য দেন।  

২০২২ সালের জানুয়ারিতে কাতারের দোহায় অনুষ্ঠেয় পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনকে সার্থক করার লক্ষ্যে কর্ম পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন, কোভিড-১৯ মহামারির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত হুমকি মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেন বক্তরা।

বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২১
এমআইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।