ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ জুন ২০২৪, ২০ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

নির্মিত হচ্ছে রায়েন্দা-বড় মাছুয়া ফেরিঘাট

এস.এস শোহান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১
নির্মিত হচ্ছে রায়েন্দা-বড় মাছুয়া ফেরিঘাট

বাগেরহাট: বাগেরহাটের শরণখোলা ও পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করার জন্য রায়েন্দা-বড় মাছুয়া ফেরিঘাট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বলেশ্বর নদীর রায়েন্দা তীরে ফেরিঘাট নির্মাণের কাজ শুরু করেছে বাগেরহাট সড়ক বিভাগ।

এ ফেরি চালু হলে দুই উপজেলার মধ্যে দূরত্ব ঘুচবে। রায়েন্দা-বড় মাছুয়া ফেরি ঘাটে চলমান বিড়ম্বনাও কমবে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

এ বছর ডিসেম্বরের প্রথম দিকে এখানে ফেরি চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছেন, বাগেরহাট সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদ উদ্দিন।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, পিরোজপুর ও বরগুনা জেলার একটা বড় অংশের সাথে বাগেরহাটের মানুষের যোগাযোগের জন্য বলেশ্বর, রায়েন্দা-বড়মাছুয়া খেয়া ব্যবহৃত হয়। এ যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ ও স্বল্প ব্যয়ে করার জন্য ফেরি চালু করা হচ্ছে। এর ফলে বলেশ্বর নদীর দুই তীরের মানুষ স্বল্প সময় এবং অল্প ব্যয়ে তাদের প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবে। ফেরির সুবিধা থাকলে দুই পাড়ের মানুষের জন্য যাত্রীবাহী গণপরিবহনও চালু হবে। আশা করছি নভেম্বরের শেষ অথবা ডিসেম্বরের প্রথমে আমরা ফেরি চালু করতে পারবো।

বাগেরহাট সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদীর দুই তীরের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ ও দ্রুততর করতে এ ফেরিঘাট নির্মাণ করা হচ্ছে। এ বছরের মার্চ মাসে রায়েন্দা পর্শ্বনে রাস্তা নির্মাণ শুরু হয়েছে। অক্টোবরের মধ্যে এ কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। এ কাজে ব্যয় হচ্ছে এক কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা। মো. মাহফুজ খান প্রাইভেট লি. নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ করছেন। কাজ শেষে ফেরি ডিভিশন এখানে ফেরি নিয়ে আসবে। নভেম্বরের শেষ অথবা ডিসেম্বরের প্রথমে এখান থেকে ফেরি চলাচল শুরু হবে। আর এখানে ফেরি চলাচল শুরু হলে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষকে পার করা সম্ভব হবে। সহস্রাধিক যানবাহনও চলাচল করবে এ ফেরিতে। এর ফলে বাগেরহাটের সাথে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, ইন্দুরকানি, বরগুনার পাথরঘাটাসহ বেশকিছু এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক সহজ হবে।

এদিকে বলেশ্বর নদীতে ফেরি চালু হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

মঠবাড়িয়া এলাকার মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, পার্শ্ববর্তী উপজেলা হওয়ায় নানা কারণে আমাদের শরণখোলা যেতে হয়। কিন্তু বলেশ্বর নদীতে ফেরি না থাকায় যাওয়া-আসায় খুব সমস্যা হয়। এই ফেরি চালু হলে দুই পাড়ের মানুষের যোগাযোগ আরও ঘনিষ্ট হবে। ব্যবসা-বানিজ্যসহ অন্যান্য কাজ-কর্মও বৃদ্ধি পাবে।

ব্যবসায়ী লতিফ বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাড়ি শরণখোলায় হলেও ব্যবসা করি মঠবাড়িয়ায়। প্রতিদিন সকালে যাই, রাতে ফিরে আসি। এখানে খেয়া হিসেবে যে ইঞ্জিন চালিত ট্রলার চলে তাতে ভাড়া অনেক বেশি নেয়। যাত্রীদের ওপর মারাত্মক জুলুম করে তারা । ২০২০ সালেও খেয়ার ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। এখন তারা ১০০ থেকে ৩০০ টাকাও ভাড়া নেয়। এই ফেরি হলে জুলুমটা অন্তত কমবে।

মঠবাড়িয়া উপজেলার বড়মাছুয়া গ্রামের মুনছুর, ওসমান, মাধুরী রানী, চুন্নু মিয়াসহ কয়েকজন বাংলানিউজকে জানান, এখানে ফেরি হলে বাস, অ্যাম্বুলেন্স, অটো, ভ্যান-রিকশাসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করবে। আমাদের অনেক সুবিধা হবে। সহজে মঠবাড়িয়া থেকে রায়েন্দা যেতে পারব। রায়েন্দা থেকে বাগেরহাট যেতে পারব।

রায়েন্দার ডালিম, ইসমাইল হোসেন, ঝর্ণা বেগমসহ কয়েকজন বাংলানিউজকে জানান, ফেরি চালু হলে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, তুষখালী, ইন্দুরকানী, বরগুনার পাথরঘাটাসহ পুরো বরিশালের সাথে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। আমরা সহজেই নদী পার হতে পারবো।

রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আছাদুজ্জামান মিলন বাংলানিউজকে বলেন, ব্যবসা-বানিজ্য, সামাজিক সম্পর্কসহ নানা কারণে বাগেরহাটের উপকূলীয় উপজেলা শরণখোলার সাথে পাশ্ববর্তী পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার একটি ঘনিষ্ট যোগাযোগ রয়েছে। কিন্তু এই যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাধা হচ্ছে বলেশ্বর নদী। বলেশ্বর নদীতে ফেরি চালু হলে মানুষের যোগযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।