নড়াইল: বালু বোঝাই বাল্কহেডের ধাক্কায় নড়াইলের কালিয়ায় নবগঙ্গা নদীর ওপর নির্মাণাধীন ‘কালিয়া সেতুর’ একটি পিলার ভেঙে নদীতে তলিয়ে গেছে।
রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ওই পিলারটি ভেঙে পড়ে।
নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় নড়াইল-কালিয়া সড়কের নবগঙ্গা নদীর ওপর ৬৫ কোটি ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৩৪৪ টাকা ব্যয়ে ৬৫১.৮৩ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০.২৫ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট ‘কালিয়া সেতুর’ নির্মাণের কাজ হাতে নেয় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
দাপ্তরিক কাজ শেষে মো. জামিল ইকবাল ও মো. মঈন উদ্দি বাশী নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে যৌথভাবে ২০১৮ সালের ১৮ মার্চ এক বছরের মেয়াদে নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
সেই অনুযায়ী ২০১৯ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ না শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নকশা জটিলতা ও করোনাকালের দোহাই দিয়ে প্রথমবার ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এক বছর সময় বৃদ্ধি করে নেয়। সেই বর্ধিত সময়েও কাজ শেষ করতে পারেনি। পরে একই কায়দায় সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে ম্যানেজ করে আবার ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সেতুটির নির্মাণকাজের সময়সীমা এক বছর বাড়িয় নেয় তারা।
গত তিন বছরেও সেতুর কাজ শেষ হয়নি। আবার তারা একইভাবে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এক বছর কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করে নিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
প্রকৌশলী মিনহাজুল ইসলাম জানান, সেতুটির নির্মাণকাজ শুরুর পর নবম পাইল পিলারটিতে গত বছর একটি বালু বোঝাই বাল্কহেড ধাক্কা দিলে সেটি হেলে হয়ে পড়ে। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে সেটিকে সোজা করে কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু রোববার রাত পৌনে ১২টার দিকে একটি বালু বোঝাই বাল্কহেড ওই পিলারটিতে আবার ধাক্কা দেয়। এতে করে সেটি পড়ে যায়।
প্রকৌশলী জানান, তারা বুঝে ওঠার আগেই বাল্কহেডটি পালিয়ে গেছে। সোমবার বিষয়টি নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও জানান, সেতুটির নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ, নকশা জটিলতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ করোনা সংকটের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। ইতিমধ্যে সেতুর ৬১ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে আবার সেতুর পিলারটি ভেঙে পড়ায় নির্মাণকাজে আরও সময় লাগতে পারে।
পিলারটি ভেঙে নদীর পানিতে তলিয়ে যাওযার সত্যতা স্বীকার করেছেন নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এ এম আতিকুল্লাহ। তিনি বলেন, ঘটনাটি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও বিশেষজ্ঞদের জানানো হয়েছে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে ঝুঁকি এড়িয়ে সেতুটি নতুন আঙ্গিকে দ্রুততার সঙ্গে নির্মাণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২১
জেএইচটি