কক্সবাজার: বিশেষভাবে সক্ষম শিশুরা সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত একটি জনগোষ্ঠী। এ সব শিশুরা স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও জীবন ধারণের ক্ষেত্রে নানা রকম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।
কক্সবাজারে ইউনিসেফের সহযোগিতায় বাংলাদেশ বেতার কক্সবাজার কেন্দ্র আয়োজিত দুই দিনের ‘টিওটি অন ডিজ্যাবিলিটি ইনক্লুসান অ্যান্ড লিডারশিপ স্কীল’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক আহম্মদ কামরুজ্জামান এ কথা বলেন।
শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) শুরু হওয়া এ কর্মশালা রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সম্পন্ন হয়।
কর্মশালায় আহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, শারীরিকভাবে অক্ষম এ জনগোষ্ঠীকে কীভাবে নিরাপদ রাখা যায় এবং তাদের সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে কীভাবে মূল ধারায় অন্তর্ভুক্ত করা যায়- এটিই এই প্রশিক্ষণের মূল বিবেচ্য বিষয়।
‘সবশেষে এ প্রশিক্ষণ হতে প্রাপ্ত জ্ঞানের সফল প্রয়োগের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করার আহ্বান জানান বাংলাদেশ বেতারের এ মহাপরিচালক।
বাংলাদেশ বেতারের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অনুষ্ঠান) সালাহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এ কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক মোহাম্মদ আমানুর রহমান খান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (পরিকল্পনা) ও জাতীয় প্রকল্প পরিচালক মো. আনছার আলী ও ইউনিসেফ কক্সবাজারের কমিউনিকেশন ফর ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট জর্জিনা মাতেঙ্গা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলাদেশ বেতার, কক্সবাজার কেন্দ্রের অ্যাডোলেসেন্ট অ্যান্ড সিডাব্লিওসি কো-অর্ডিনেটর ইকরাম হোসেন তুষার।
স্বাগত বক্তব্যে আঞ্চলিক পরিচালক আমানুর রহমান খান বলেন, ‘সমাজের বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের পেছনে রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়। উন্নত বাংলাদেশ গড়তে তাদের উন্নয়নের মূল ধারায় নিয়ে আসতে হবে। ’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. আনছার আলী বলেন, ‘ইউনিসেফের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকার নারী ও শিশুর উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বেতার সহযোগী হিসেবে অংশ নিয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের অধিকার এবং তাদের সমাজের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার জন্য করণীয় বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদেরও সম্পৃক্ত করে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
ইউনিসেফ কক্সবাজারের কমিউনিকেশন ফর ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট জর্জিনা মাতেঙ্গা বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে বাংলাদেশ বেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এজন্য বেতার কর্তৃপক্ষ বিশেষ ধন্যবাদ প্রাপ্য।
তিনি আরও বলেন, ‘সমাজের বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের মতই অক্ষম ব্যক্তিদেরও গুরুত্ব দিতে হবে। ’
‘বাংলাদেশে একটি কুসংস্কার প্রচলিত যে অক্ষম ব্যক্তিরা সমাজে অভিশপ্ত। যার ফলে তারা অনেক পিছিয়ে আছে। তাদের আমরা পারিবারিক, সামাজিকভাবে অবহেলা করি। তাদের সমাজের বোঝা মনে না করে মূল ধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে বলেন অনুষ্ঠানের সভাপতি ও বাংলাদেশ বেতারের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।
এদিকে, একই দিনে বাংলাদেশ বেতার, কক্সবাজার কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা এবং শিশুতোষ অনুষ্ঠান নির্মাণ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক আহম্মদ কামরুজ্জামান।
এ সময় তিনি বলেন, স্থানীয় শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে কাজ করছে বেতার। এই কাজগুলো আরও আন্তরিকতা এবং গুরুত্বের সঙ্গে করতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের পড়াশোনার পাশাপাশি এ ধরনের সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকতে হবে। পরে কর্মশালায় অংশ নেওয়া ৩টি স্কুলের ১৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১
এসবি/এসআরএস