ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েও পছন্দ করেন টেলিভিশন দেখতে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েও পছন্দ করেন টেলিভিশন দেখতে ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: মাশফিয়া জাহান অরবি বরিশাল সরকারি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। যিনি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েও পড়াশুনার বাহিরে টেলিভিশন দেখতে খুব পছন্দ করেন।

  আর টেলিভিশনে মুভি ও কার্টুন দেখতেই বেশি ভালো লাগেই বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন অরবি।

তার মা সিমা আক্তার জানান, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও সাধারণ বাচ্চাদের মতো টেলিভিশনে সবথেকে বেশি কার্টুন দেখতে পছন্দ করে অরবি। সুযোগ পেলে টিভির সামনে গিয়ে বসলে আর সহসা উঠতে চায়না। হাসির কিংবা মজার দৃশ্য হলে সেখানে স্বাভাবিক শিশুদের মতোই হেঁসে ওঠে।  

তিনি বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও ওর সবকিছু স্বাভাবিক মানুষের মতো, খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে বই পড়া, চলাচল করা, টিভি দেখা সবকিছুই।  

সিমা আক্তার বলেন, করোনাকালে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বাসায় বসে যতোটা সম্ভব পড়ানোর চেষ্টা করেছি। তবে বিদ্যালয়ের ঘাটতি থেকেই যায়, কারণ বিদ্যালয়ে পাঠগ্রহণের পাশাপাশি তার মানসিক বিকাশে সহায়তা করছে। এখানে আসার পরই সহপাঠীদের সঙ্গে ক্লাস করতে গিয়ে অন্যরকম আনন্দ পাচ্ছে সে, প্রথম দিন থেকেই অনেকটাই প্রাণবন্ত ছিল।

এদিকে শুধু অরবি নয়, এ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শফিকুল ইসলামও টেলিভিশন দেখতে খুব পছন্দ করেন। তবে সে টেলিভিশনে বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা দেখতে বেশি পছন্দ করেন বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে খেলাধুলা করতেও পছন্দ করেন এই ছাত্র।

তবে এ দুজনের বাহিরে সকল শিক্ষার্থীরই টেলিভিশন দেখায় আগ্রহ রয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ে শিক্ষক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী খোকন চন্দ্র বর্মন। তিনি বলেন, একজন অনাবাসিকসহ তাদের বিদ্যালয়ে ৪৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। যারমধ্যে ১৮ জন মেয়ে ও ৩০ জন ছেলে রয়েছেন। বিদ্যালয়ের আবাসিক ব্যবস্থাপনায় ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা দুটি টেলিভিশন আছে।

তিনি বলেন, মূলত টেলিভিশনে যে সকল প্রোগ্রামে ভয়েস রয়েছে, সেগুলোর প্রতি আগ্রহ থাকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের। ভয়েস শুনেই ওরা দৃশ্যপট কল্পনা করে এবং সেই অনুযায়ী তারা আবেগ প্রকাশ করতে পারে। হাসির দৃশ্যপট শুনে যেমন হাসতে পারে, তেমনি আবার দুঃখ বা কষ্টের দৃশ্যপট শুনে সেইধরণের রিয়্যাক্ট করে।

শিশু শিক্ষার্থীরা কার্টুনের প্রতি আগ্রহী থাকলেও একটু বড় যারা তারা খেলাধুলা ও মুভি দেখার প্রতি আগ্রহী থাকে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি সাউথ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে যে বাংলাদেশের খেলা হয়েছে, সেগুলো বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন দেখেছে তখন জয়ের উল্লাসগুলো সাধারণ মানুষের মতোই করেছে। আর পরাজয়েও হতাশা প্রকাশ করেছে তারা।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. জাহান কবির বলেন, এ বিদ্যালয় থেকে ঝড়ে পড়ার হার নেই বললেই চলে। আর সফলতার দৃশ্যও অনেক। ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষক-কর্মচারী যারাই আছেন এখানে তারা সবাই একে অপরের প্রতি আন্তরিক।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১
এমএস/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।