ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

সাভারে গৃহকর্মীকে ধর্ষণ, মিমাংসার চেষ্টায় পুলিশ!

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১
সাভারে গৃহকর্মীকে ধর্ষণ, মিমাংসার চেষ্টায় পুলিশ! নির্যাতিত গৃহকর্মী

সাভার (ঢাকা): সাভারে আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকার সোনিয়া মার্কেটের মালিকের বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহকর্মী। ধর্ষণের পর তাকে নির্যাতন এবং মাথা নেড়া করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় ভুক্তভোগী অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় শুয়ে আছে। তার শরীরে জখমের চিহ্ন রয়েছে এবং মাথা ন্যাড়া।

কথা হলে ভুক্তভোগী বলেন, গত মঙ্গলবার দুপুরে দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী লিপি বাড়িতে কাজ করার জন্য আমাকে ডেকে নিয়ে যায়। বাড়ির ফ্লোর মোছার সময় ঘরে দেলোয়ার ছাড়া তখন কেউ ছিলো না। ওই সময় দেলোয়ার আমাকে জোরপূর্বক মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। হঠাৎ সেখানে তার স্ত্রী এসে পড়ে। এসেই আমকে চড় থাপ্পড় মারতে থাকেন। পরে লিপি ও তার দেবরের স্ত্রী আমাকে ওড়না দিয়ে বেঁধে ফেলেন। তারপর আমাকে মারধর করে নেড়া করে দেন।

তিনি আরও বলেন, ওই দিন রাতে থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে আটক না করেই চলে আসে। পরদিন সকালে আমি ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই।

ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, দেলোয়ারের বাড়িতে পুলিশ আমাদের ডেকেছে। আমারা সেখানে গেলে পুলিশ বলে- দেলোয়ারের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে দিচ্ছি তোরা চলে যা। প্রথমে ১৫ হাজার টাকা চিকিৎসার জন্য দিতে চাইছে পরে ৮ হাজার টাকা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে।

ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূর রিফফাত আরা বাংলানিউজকে বলেন, ওই নারীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। চিকিৎসা দিয়ে তাকে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে গিয়ে গেট তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে। মুঠোফোনে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, সেদিন এক মহিলা কাজ করতে আইছিলো। আমি তখন নিচে ছিলাম। কিন্তু আমরা বউ আমারে খুব সন্দেহ করে। ওই কামের মহিলারে অযথাই বাইন্দা মারধর করছে। পরে দারোগা ইউনুছ আসছিল। তখন ওই মহিলারে চিকিৎসার জন্য ৮ হাজার ট্যাকা দিছি। কইছি লাগলে আরও দিমু। তবে ওই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইউনুছ আলী বাংলানিউজকে বলেন, ওই গৃহকর্মী বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন। আমি কয়েকবার গিয়ে বাড়ির মালিককে পাই নাই। সে বাসায় ছিল না। ভুক্তভোগী কোন ধর্ষণের অভিযোগ করেননি বলে জানান তিনি এবং ভুক্তভোগীকে টাকা দিয়ে মিমাংসার চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে এসআই ইউনুছের সঙ্গে আবারো কথা হলে তিনি বলেন, আমিতো মামলার এজাহার রেডি করে রাইখা আসছি। ওসি স্যার দেলোয়ার ও তার বউকে ধরে নিয়ে আসতে বলছে। তাই তাদের ধরতে বের হইছি। পরে বিস্তারিত কথা হবে।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমিতো এ বিষয়ে জানি না। এরকম কেউ ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে কি না জানা নেই আমার। তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা্ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।