ঢাকা: রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দু’জনকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবি জানায়, ভিকটিম সাইফুল ইসলাম, কচি, রিপন ও সুমন ছোটবেলার বন্ধু ছিলেন।
গত ১৫ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে রেমন্ড টেইলার্সের সামনে দুই নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে কুমিল্লার বরুড়া থেকে মনিরুজ্জামান সুমন ও মো. ইমনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে, রাজধানীর খিলগাঁও ত্রিমোহনী এলাকা থেকে দু’টি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়েছে।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
তিনি বলেন, দলীয় পদ-পদবী না পেয়ে একসময়ের বন্ধু সাইফুল, সুমন, কচি ও রিপনের মধ্যে ফাটল তৈরি হয়। এরপর তারা পৃথক গ্রুপ তৈরি করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সুমন ও রিপন গ্রুপ একত্রিত হয়ে সাইফুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
রিপন গ্রুপের সদস্য বাশার হত্যা মামলার এক নম্বর অভিযুক্ত ছিলেন ভিকটিম সাইফুল। ওই মামলায় সাইফুল দীর্ঘদিন জেলে থাকার কারণে সুমন গ্রুপ এলাকায় একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতে থাকে।
সাইফুল জেল থেকে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর সুমন গ্রুপ ও রিপন গ্রুপ এলাকায় তাদের আধিপত্য বিস্তার হ্রাস পাওয়ার ভয়ে দু’গ্রুপ একত্রিত হয়ে ভিকটিম সাইফুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
তিনি বলেন, গত ১৫ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে রেমন্ড টেইলার্সের সামনে রাস্তায় পূর্ব পরিকল্পনার অনুযায়ী রিপন, কচি, সুমন ও ইমনসহ ১২ থেকে ১৩ জন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এ সময় সাইফুলকে রিপন দুই রাউন্ড ও সুমন এক রাউন্ড গুলি করে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় নয়জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন সাইফুলের স্ত্রী। এর মধ্যে মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে কচি, রাসেল তালুকদার ওরফে চাপাতি রাসেল, উজ্জ্বল তালুকদার ও আমির হোসেনকে এর আগেই গ্রেফতার করা হয়। আর পলাতক রিপনসহ অন্য সহযোগীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।
সম্প্রতি রাজধানীতে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, ডিএমপির পরিবেশ এখন শান্ত। যদিও আগে প্রায়ই অস্ত্রের মহড়া দেখা যেত, হতো বোমাবাজি। গত চার মাসে রাজধানীতে যেখানেই অস্ত্রের মহড়া, বোমাবাজি হয়েছে জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অস্ত্র-গুলি জব্দ করা হয়েছে।
দুই কোটি জনগণের বসবাসের নগরী রাজধানীতে অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে ডিএমপি। স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, কোনো ধরনের গোলাগুলি, অস্ত্রের মহড়া, ঝনঝনানি বরদাস্ত করা হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২১
পিএম/আরবি