ঢাকা, রবিবার, ২৮ পৌষ ১৪৩১, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

রোহিঙ্গাদের শিল্প-সংস্কৃতি বিষয়ক প্রদর্শনী

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১
রোহিঙ্গাদের শিল্প-সংস্কৃতি বিষয়ক প্রদর্শনী

ঢাকা: রোহিঙ্গাদের স্মৃতি, অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশার প্রতিনিধিত্বকারী ১০০ সাংস্কৃতিক পণ্য এবং শিল্পকর্ম নিয়ে ঢাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) অব দ্য সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি) অব নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) আয়োজনে রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) শুরু হওয়া প্রদর্শনীটি চলবে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

আইওএম-এর রোহিঙ্গা কালচারাল মেমরি সেন্টারের (আরসিএমসি) সঙ্গে যুক্ত রোহিঙ্গা কারিগররা এসব পণ্য প্রস্তুত করেছেন নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সহায়তায়। প্রদর্শনীটি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যকে বৃহৎ পরিসরে সংরক্ষণে আরসিএমসি-এর চলমান উদ্যোগের অংশ।

আইওএম বাংলাদেশের মিশন প্রধান গিওরগি গিগাওরি বলেন, প্রদর্শনীটির লক্ষ্য হচ্ছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যের সৌন্দর্য এবং এর বিভিন্ন দিক প্রদর্শনের মাধ্যমে সম্প্রদায়কে ক্ষমতায়িত করা এবং এর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য যেন পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও চলমান থাকে তা নিশ্চিত করা। আরসিএমসি প্লাটফর্মটি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর গল্প বিশ্বব্যাপী মানুষের কাছে তুলে ধরতে এবং অভিবাসীদের সঙ্গে যুক্ত করতে সহযোগিতা করছে।

প্রদর্শনীর সংগ্রহের মধ্যে ‘মিয়ানমার লাইফ’, ‘ক্যাম্প লাইফ’ এবং ‘ফিউচার লাইফ’ শিরোনামের চিত্রকর্মগুলো রোহিঙ্গাদের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতকে চিত্রিত করে। ঐতিহ্যবাহী ঘর, নৌকা এবং আসবাবপত্রের স্কেল মডেলগুলো আরাকানের (বর্তমান রাখাইন) দৈনন্দিন জীবনকে তুলে ধরে। কৃষিকাজ, মাছধরা এবং গৃহস্থালিকর্মের বিভিন্ন যন্ত্র তাদের ঐতিহ্যগত জীবিকা এবং কারুশিল্পের দক্ষতা নির্দেশ করে। এছাড়া ক্যাম্পের ভিডিওগুলো রোহিঙ্গা কারিগরদের গল্প বলে।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো বলেন, রোহিঙ্গা কালচালার মেমরি সেন্টার এবং এ জাতীয় যত প্রয়াস আছে সেসবের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে বস্তুগত এবং অধরা ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করা, যা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শিশু-কিশোরদের সাংস্কৃতিক পরিচয় নিশ্চিত করবে এবং মাতৃভূমির সঙ্গে তাদের বন্ধন দৃঢ় করবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যানে জেরার্ড ভ্যান লিউয়েন বলেন, সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি হচ্ছে মনের প্রতিফলন, উজ্জীবন এবং লালনপালন। শিল্পকর্ম, কারুশিল্প এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক চর্চার সুযোগ সবার জন্য সুগম করা উচিত, বিশেষ করে বাস্তুহারা এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতদের জন্য। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং পরিচয় সংরক্ষণের মাধ্যমে আরসিএমসি তাদের আশা এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে শক্তিশালী করেছে। আমি আশা করছি, প্রথমে ঢাকা এবং পরবর্তীতে আমস্টারডামে এই প্রদর্শনী আয়োজনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের অঙ্গীকার এবং তাদের দেওয়া বাংলাদেশের আতিথেয়তা বিশ্বব্যাপী আরও বড় পরিসরে স্বীকৃত হবে।

প্রদর্শনীটি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটো গ্যালারিতে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এই প্রদর্শনীটির পরে শিল্পকর্মগুলো নেদারল্যান্ডসে নিয়ে যাওয়া হবে ইউনিভার্সিটি অব আমস্টারডামে আরেকটি প্রদর্শনীর জন্য। সীমিত আকারের একটি সংস্করণ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে তাদের গবেষণা কর্মসূচির জন্য।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারুশিল্পের প্রদর্শনী প্রকৃতপক্ষে একটি মহৎ উদ্যোগ। এটা নির্দেশ করে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের সংস্কৃতি সংরক্ষণে শ্রদ্ধাশীল। এই উদ্যোগটি আইওএম এবং নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির সম্পর্ক আরও জোরদার করবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১
টিআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।