ঢাকা: ঢাকা শহরকে সিঙ্গাপুর সিটির মতো করতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমরা এরইমধ্যে ড্যাপের অংশীজনদের মতামত নিয়েছি এখন পর্যালোচনা চলছে, আশা করছি ডিসেম্বরের মধ্যেই চূড়ান্ত করা যাবে।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ের নিউজ সংগ্রহে নিয়োজিত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
ডিসেম্বরের মধ্যেই ড্যাপ করবেন সেখানে কী কী ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঢাকাকে সিঙ্গাপুরের মতো করে গড়ে তুলতে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান মানুষের কত ঘনত্ব থাকবে সেটা একটা বিষয়। আর প্ল্যানে হাউজিংয়ের জন্য ও কর্মাসিয়াল এরিয়ার জন্য ৪০ শতাংশ৷ আর বাকি ৬০ শতাংশের মধ্যে ২৫ শতাংশ হবে যোগাযোগের জন্য। এটা হলো একটি আদর্শ নগর। কিন্তু এটাতো এখন নেই।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বের অন্যান্য সুন্দর শহরগুলোর মতো করে ঢাকাকে তৈরি করার সুযোগ নেই। সর্বত্র বহুতল ভবন করে ফেলেছে। ঢাকাতে ২ কোটির বেশি মানুষ আছে। এতো মানুষতো এখানে রাখা যাবে না। তাহলে কি জোন করে বের করে দেবো। এজন্য গ্রামে আধুনিক সুবিধা বাড়াতে হবে। আর ঢাকার জন্য কিছু নিয়ম তৈরি করতে হবে এখন যেমন সব নাগরিক সমান হোল্ডিং ট্যাক্স, বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল দিচ্ছেন। এখন যদি গুলশানে হোল্ডিং ট্যাক্স যদি বাড়িয়ে দেই। বিদ্যুৎবিল বাড়িয়ে দেই তাহলে তিনি গুলশান কিংবা ধানমন্ডি না থেকে টঙ্গী চলে যাবেন। তাহলে টঙ্গীতেই তার সুবিধা করে দিতে হবে।
ঢাকা মহানগরীর রাস্তাগুলোর মেয়াদ কতদিনের আর তার আগেই কেন রাস্তাগুলো ধ্বংস হয় এমন এক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের সব রাস্তা এমন না। কিছু অসামঞ্জস্য আছে, এজন্যই আমি আইডি নম্বরের কথা বলেছি। তাহলে আমরা অব্যবস্থাপনাগুলো ধরতে পারবো।
আইডি নম্বরের মাধ্যমে রাস্তার ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের আইডি নম্বর করা হচ্ছে এজন্যই যে কোথাও কোন অসামজস্য হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এজন্য এটা করা হয়েছে। আমাদের অনেক পরিবর্তন হয়েছে ওয়াসারসহ অন্যান্যদের যে কাটাকাটি হয় সেটা অনেক কমে গেছে।
ঢাকাকে একটি পরিকল্পিত নান্দনিক শহরে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১৬-২০৩৫ সাল পর্যন্ত ২০ বছরের জন্য তৈরি করা হয় ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান বা বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ)। ঢাকা ও এর আশেপাশের এরিয়া ধরে মোট ১ হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার ভূমি নির্ধারণ করা হয়েছে। যেখানে ঢাকাকে একটি মানবিক ও দৃষ্টিনন্দন শহর হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যার মূললক্ষ্য আর্থ সামাজিক শ্রেণিপেশার মানুষের প্রয়োজন ও জীবনযাত্রাকে উন্নত করা।
উল্লেখ্য, এর আগেও ঢাকাকে পরিকল্পিত নগরী গড়ে তুলতে তৈরি করা হয় ‘মাস্টারপ্ল্যান’ ১৯৫৯ -১৯৮১। ‘ঢাকা মহানগরী এলাকার সমন্বিত পরিকল্পনা’ ১৯৮১। ১৯৯৫-২০১৫ সাল র্পযন্ত প্রণয়ন করা হয় ঢাকা মেট্রোপলিটন প্ল্যান-ডিএমডিপি। রাজউকের তৈরি করা এই পরিকল্পনা অনুমোদন পায় ১৯৯৭ সালে এসে। ১৯৯৫-২০১৫ করা ডিএমডিপির আলোকে ২০১০ সালে তৈরি করা হয় ‘ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যান’। এই প্ল্যান বাস্তবায়নে তৈরি করা হয় বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা ২০১৬-২০৩৫। যার সংশোধন চলছে এখন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২১
জিসিজি/এএটি