ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিয়ে করায় চাকরি হারালেন নবদম্পতি!

সাভার করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১
বিয়ে করায় চাকরি হারালেন নবদম্পতি! মোমিনুল ইসলাম শামীম ও লিমা আক্তার

সাভার (ঢাকা): পরিবারের সম্মতি নিয়ে বিয়ে করলেও চাকরি হারালেন প্রাপ্ত বয়স্ক পোশাক শ্রমিক নবদম্পতি মোমিনুল ইসলাম শামীম ও লিমা আক্তার।

আশুলিয়ার নরসিংহপুর নিট এশিয়া লিমিটেড নামে পোশাক কারখানায় কাজ করতেন ওই নবদম্পতি।

শামীম কারখানার সুপারভাইজার হিসেবে প্রায় আট বছর যাবত কাজ করতেন। আর তার স্ত্রী লিমা চার মাস যাবত। তাদের দু’জনেরই বাড়ি রংপুর জেলায়।

মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা হয় ওই নবদম্পতির।

এ সময় তারা জানান, গত ১৭ সেপ্টেম্বর নিট এশিয়া কারখানাটির পাশেই তাদের বাসস্থানে বিয়ে সম্পন্ন হয়। পরদিন ১৮ সেপ্টেম্বর সকালে কারখানায় গেলে কাজ করা অবস্থায় তাদের ডেকে নিয়ে  চাকরি ছেড়ে দিতে বলা হয়। এ অবস্থায় তারা চাকরি ছাড়তে অস্বীকার করেন।

শামীম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা দু’জন বিয়ে করেছি। এটা কী আমাদের অপরাধ? বিয়ের পর দিন নিয়মিতভাবে দু’জনেই কারখানায় যাওয়ার একটু পরই আমাদের অ্যাডমিন (প্রশাসন বিভাগ) কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর সেখানে নানাভাবে আমাদের অপমান করা হয়। শেষ মেষ চাকরি ছাড়তে দু’জনকেই রিজাইন লেটারে স্বাক্ষর দিতে বলা হয়। আমরা কেউ স্বাক্ষর দেইনি। তবে আমাদের পরিচয়পত্রগুলো (আইডি কার্ড) রেখে দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ আট বছর যাবত আমি এ কারখানায় কাজ করছি। কখনো কারখানা কর্তৃপক্ষ আমার কাজের সমস্যা ধরতে পারেনি। হঠাৎ শুক্রবারে বিয়ে করার পর আমাকে ও লিমাকে ডেকে চাকরি ছাড়তে বলা হয়। আমার ও লিমার যত পাওনাদি পাই, তার কিছুই দেওয়া হয়নি।

লিমা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, চার মাস যাবত কারখানায় সহকারী অপারেটর হিসেবে কাজ করি। কখনো শুনিনি যে বিয়ে করলে আর চাকরি করা যায় না! আমরা এক অফিসের ভেতরে দুই জন বিয়ে করেছি, এটাতে তো আরও অফিস খুশি থাকার কথা। উল্টো আমাদের দু’জনকে বের করে দেওয়া হলো কারখানা থেকে।

শামীম ও লিমার এটি দ্বিতীয় বিয়ে বলে জানা গেছে।

এসব বিষয়ে নিট এশিয়া কারখানার প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ বাংলানিউজকে বলেন, শামীম আগেও একটি বিয়ে করেছিলেন। তার কারণে কারখানার কর্ম পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। মূলত তিনি একজন সুপারভাইজার। তিনি তার দায়িত্বে থাকা শ্রমিককে কী করে বিয়ে করেন? এ কারণে তাকে ও তার বর্তমান স্ত্রী লিমাকে চাকরি ছাড়তে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা তা না করে উল্টো রাগ করে কারখানা থেকে বেব হয়ে গেছেন। এখন চাকরি না ছাড়লে তো আর পাওনাদি পাবেন না তারা।

এ বিষয়ে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, একজন ব্যক্তি কাকে বিয়ে করবেন, কখন বিয়ে করবেন সেটা কি কোম্পানি থেকে জেনে নিয়ে বিয়ে করতে হবে? এই অধিকার তো বাবা-মাও রাখেন না। আর আশুলিয়া নসিংহপুর অবস্থিত নিট এশিয়া লিমিটেডের শ্রমিক কারখানার অনুমতি ছাড়া বিয়ে করার অপরাধে স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই চাকরিচ্যুত করলেন কারখানা মালিকপক্ষ। এটা অন্যায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।