ঢাকা: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, দেশ ও মানুষের জন্য কল্যাণকর যে কোনো প্রকল্পে উন্নয়ন সংস্থার অর্থায়ন না পেলেও সরকার নিজস্ব অর্থায়নে তা বাস্তবায়ন করবে।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে স্থানীয় সরকার বিভাগ আয়োজিত ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রাম ফর দ্য পুওরেস্ট (আইএসপিপি) প্রকল্পের অধীনে ‘গুড প্রাকটিস অ্যান্ড লেসন লার্নড’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ধীরে ধীরে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশের জন্য যা মঙ্গলকর ও লাভজনক, এমন প্রকল্পে যদি বিদেশি কোনো সংস্থা অর্থায়ন না করে তাহলে আমরা কি সেই প্রকল্প নেব না? অবশ্যই নিতে হবে এবং সরকার তা নিচ্ছে, কারণ সেই সক্ষমতা আমাদের রয়েছে।
তিনি বলেন, দেশ ও মানুষের উন্নয়নে অনেক প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। উদ্দেশ্য ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। শুধু প্রকল্প নিয়ে নিলেই হবে না, এগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রকল্প নেওয়া হয় আবার শেষও হয়। কিন্তু প্রকল্প থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং প্রকল্পের গুড প্রাক্টিসগুলো পরবর্তীতে কাজে লাগাতে হবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষই সম্পদ। প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যে সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের সেই সুপ্ত প্রতিভাকে কাজে লাগাতে হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি উক্তি উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, বঙ্গবন্ধু মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশ পেয়ে বলেছিলেন—দেশে কিছু থাক আর না থাক, আমার মাটি ও মানুষ আছে। সেই মাটি ও মানুষকে সম্পদে রূপান্তরিত করে দেশ গড়ার কাজ শুরু করেন তিনি।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, নিজ সন্তানের জন্য, প্রতিবেশীর জন্য, দেশের মানুষের জন্য সর্বোপরি বিশ্ব মানবতার জন্য কাজ করতে হবে। একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বা আমি যতদিন বেঁচে থাকব শুধু সেই সময়ের কথা চিন্তা করে উন্নয়ন করব, এটা ঠিক না। এ ধরনের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ যেমন ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভাগুলিকে শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই। এগুলোকে শক্তিশালী বা ক্ষমতায়নের মাধ্যমে দেশের চিত্র পরিবর্তন করা সম্ভব।
ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রাম ফর দ্য পুওরেস্ট (আইএসপিপি) প্রকল্পকে একটি ব্যতিক্রম প্রকল্প হিসেবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং তার শিশু যারা আগামী দিনের ভবিষ্যত তাদের স্বাস্থ্য সেবায় সরাসরি অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে। প্রকল্পটি বর্তমান সরকারের একটি যুগান্তকারী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক দীপক চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের অপারেশন ম্যানেজার ড্যানডেন চেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকার বিভাগের মাধ্যমে পরিচালিত প্রকল্পটি দুটি বিভাগের (রংপুর ও ময়মনসিংহ) সাতটি জেলার ৪৩টি উপজেলায় ৪৪৪টি ইউনিয়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্প এলাকার অন্তঃসত্ত্বা নারী ও অন্তঃসত্ত্বাকালীন কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে সেবা, শূন্য থেকে সাত মাস বয়সের শিশুদের ওজন ও উচ্চতার পরিমাপ এবং শিশুদের দৈহিক বিকাশ ও বৃদ্ধির জন্য অর্থ সহায়তা পেয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১
এমআইএইচ/এমজেএফ