ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষিতে আসন্ন জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৬) বিষয়ক এক ওয়েবিনারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত এ ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি মোকাবিলায় বিশেষ করে অভিযোজন ও প্রশমনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে। কয়লা ক্ষেত্রে কার্বন নির্গমণে বাংলাদেশ যে ভূমিকা নিয়েছে, সেটা উদাহরণযোগ্য। ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ তার লক্ষ্য অনুযায়ী কার্বন নির্গমণে শূণ্যের কোঠায় পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার।
জলবায়ু পরিবর্তনের হার কমানোতে ব্রিটিশ সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে রবার্ট ডিকসন বলেন, আমাদের কাছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের অসাধারণ কতগুলো প্রমাণ রয়েছে, আমরা যদি বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে না রাখতে পারি তাহলে ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। আমরা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কয়লা, নগদ অর্থ, গাড়ি এবং গাছ—এই চারটি জিনিসের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছি।
তিনি বলেন, সুন্দরবনকে রক্ষা করা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। কেননা এটি, যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করে।
পরিবেশ বিজ্ঞানী ও সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. আতিক রহমান শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, করোনার কারণে পাঁচ থেকে বিশ শতাংশ দেশ আসন্ন কপ-২৬ সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে পারবে না, সেখানে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে এতে অংশ নিচ্ছে এটাই বড়কিছু।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ তার বাৎসরিক বাজেটের ১০ থেকে ১৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করলেও পদ্মাসেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে যন্ত্রপাতির পেট্রোল ডাম্পিংয়ের সমালোচনা করেন তিনি।
ড. আতিক বলেন, বাংলাদেশ কয়লা বাদ দিয়ে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গিয়েছে, যা প্রশংসার দাবি রাখে। সৌরবিদ্যুতের ৫.৫৮ মিলিয়ন চুল্লির মাধ্যমে ২০ মিলিয়নের বেশি মানুষ এ দেশে সরাসরি উপকৃত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে ড. আতিক বাংলাদেশের প্রস্তাবিত ১০০টি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলকে জলবায়ু সহিষ্ণু করার পরামর্শ দেন।
ওয়েবিনারে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, পরিবেশ আইনবিদ ও বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আইইউসিএন বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সদস্য সচিব স্থপতি ইকবাল হাবিব, সিজিএসের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ। ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন সিজিএস’র নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১
টিআর/এমজেএফ