গোপালগঞ্জ: অনিন্দ্য সৌন্দর্যের কারণে পদ্মকে জলজ ফুলের রাণী বলা হয়। এ বিলের রাশি রাশি প্রস্ফুটিত পদ্মফুল দর্শনার্থীদের মধ্যে আভা ছাড়াচ্ছে।
প্রতিবছরই প্রকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া এখানকার পদ্মফুল দর্শনার্থীদের হাতছানি দেয়। পদ্মফুল দেখার উদ্দেশে গোপালগঞ্জসহ আশাপাশের কয়েক জেলার মানুষ এ বিলে ঘুরতে আসেন। তারা নৌকায় ঘুরে পদ্মবিলের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি কিছু সময়ে জন্য হারিয়ে যান প্রকৃতির মাঝে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের বিলবেষ্টিত গ্রাম বলাকইড়। জেলা শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এ বিল ইতোমধ্যে ‘পদ্মবিল’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। ১৯৮৮ সালে বন্যার পর থেকে বর্ষাকালে এ বিলের অধিকাংশ জমিতেই প্রাকৃতিকভাবে পদ্মফুল জন্মে থাকে। এ সময় পুরো বিল গোলাপী আর সাদা রঙের পদ্ম ভরে ওঠে। এ যেন বিধাতার এক অপরূপ সৃষ্টি যা দেখলে যে কারো মন জুড়িয়ে যায়।
পদ্মবিলের সৌন্দর্য দেখার জন্য প্রতিদিনই বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার পরিজন নিয়ে দর্শনার্থীরা এখানে আসেন। যে যার মতো করে পদ্মবিলের সৌন্দর্য উপভোগ করেন আর ক্যামেরার ফ্রেম বন্দি করে রাখছেন এ বিলের অপরূপ সৌন্দর্য।
আষাঢ় থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত বলাকইড় পদ্মবিলে ফুল থাকে। এ সময় এখানকার মানুষের কোনো কাজ থাকে না। তাই এ বিলে জন্ম নেওয়া পদ্ম যেন তাদের জন্য আশির্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। বিলে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের নৌকায় ঘুরিয়ে কর্মহীন মানুষ উপার্জন করছেন। এ উপার্জনের ওপর নির্ভর করে চলছে এখনকার অন্তত শতাধিক পরিবার।
গোপালগঞ্জ শহরের গৃহবধূ মেহজাবীন বলেন, করোনার কারণে পরিবার নিয়ে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছিলাম। বাচ্চাদের মানুসিক বিকাশও বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। তাই অনেক দিন পর পরিবারের সদস্য নিয়ে পদ্মবিলে এসেছি। এখানে বিশাল বিল ভরা পদ্ম ফুল দেখে ভাল লেগেছে। বাচ্চারাও উপভোগ করেছে পদ্মবিলের সৌন্দর্য। সবারই এমন প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা উচিত। তাহলে কিছু সময়ের জন্য হলেও মন ভাল হয়ে যায়।
সম্পা সাহা বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে পদ্মবিল ঘুরতে আসি। এ বিলের সৌন্দর্য দেখার মতো। এখানে ঘুরতে আসলে মন ভালো হয়ে যায়।
পদ্মবিল পাড়ের বাসিন্দা ইয়াছিন বেগ বলেন, বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ পদ্মবিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে আসে। নৌকায় ঘুরিয়ে অর্ধশতাধিক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছেন। তবে এখানে আসার রাস্তাটি সরু ও খারাপ। তাই অনেকেই গাড়ি নিয়ে আসতে পারেন না। রাস্তাটি প্রশস্ত করা হলে এখানে অনেক পর্যটক আসবে।
জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, পদ্মবিলে যাওয়ার রাস্তাটি প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মৌসুমি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্যও আমরা কাজ করছি। তখন দর্শনার্থী বা পর্যটন আর কোনো সমস্যা থাকবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২০
এনটি