ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পদ্মা এক্সপ্রেসে উঠতে না পেরে ভর্তিচ্ছুদের বিক্ষোভ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২১
পদ্মা এক্সপ্রেসে উঠতে না পেরে ভর্তিচ্ছুদের বিক্ষোভ

রাজশাহী: স্ট্যান্ডিং টিকিট নিয়েও ট্রেনে জায়গা না পেয়ে রাজশাহী স্টেশনে বিক্ষোভ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া আন্তঃনগর ট্রেন পদ্মা এক্সপ্রেসে এ ঘটনা ঘটে।

ট্রেনটি তাদের না নিয়ে চলে যাওয়ার পর রেলওয়ে স্টেশনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। তাদের অধিকাংশই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন।
 
এ সময় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা কিছু সময়ের জন্য স্টেশনের প্রধান দুই ফটক বন্ধ করে দেন এবং স্টেশনের কয়েকটি কক্ষ ভাঙচুরের চেষ্টা চালান। পরে পুলিশ ও রেল কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ স্টেশনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং শিক্ষার্থীরা কমিউটারসহ অন্য ট্রেনে করে রাজশাহী ত্যাগ করতে থাকে।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের দেওয়া তথ্য মতে- তিনদিন যাবত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তি পরীক্ষা তিন শিফটে চলছিল। পরপর তিনদিন ভর্তি পরীক্ষার বুধবার ছিল শেষ দিন। এদিন পরীক্ষা শেষে নিজ নিজ গন্তব্যে ফেরার জন্য বিকেলে রেলওয়ে স্টেশনে জড়ো হন তারা। তবে, ঢাকামুখী আন্তঃনগর ট্রেন পদ্মা এক্সপ্রেসের টিকিট ফুরিয়ে যায় আগেই।

পরিস্থিতি সামলাতে পরে স্ট্যান্ডিং টিকিটের ব্যবস্থা করে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের দাবি টিকিটের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি টাকা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই টিকিট কাটার পরও পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠতে পারেনি অন্তত ১০০ শিক্ষার্থী। বিকেল ৪টার পর আন্তঃনগর ট্রেন পদ্মা এক্সপ্রেস রাজশাহী স্টেশন থেকে ছাড়ার পর ওইসব শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে স্টেশনের মধ্যে প্রতিবাদ শুরু করেন। এ সময় তারা স্টেশনের বেশ কয়েকটি কক্ষ ভাঙচুরের চেষ্টা চালান। তখন স্টেশনে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।  
এ সময় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা স্টেশনের প্রধান ফটক কিছু সময়ের জন্য বন্ধ করে দেন। পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জিআরপি পুলিশের সঙ্গে বোয়ালিয়া থানার পুলিশও যোগ দেয়।

মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারন চন্দ্র বর্মন ঘটনাস্থলে এসে পৃথকভাবে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী এবং রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, শিক্ষার্থীরা স্ট্যান্ডিং টিকিট দেখিয়ে রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়া যে কোনো ট্রেনে যেতে পারবেন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সেই তথ্য বোয়ালিয়া থানার ওসি বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দেন। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

তবে, কিশোরগঞ্জের নাঈম নামের এক শিক্ষার্থী দাবি করেন- তার ব্যাগ পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে থেকে গেছে। যার মধ্যে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড,  প্রবেশপত্র এবং মোবাইল রয়েছে। তিনি দাবি করেন ওই ব্যাগ না ফেরত পাওয়া পর্যন্ত স্টেশন ত্যাগ করবেন না।  

এদিকে, ঘটনার পর পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দাবি- ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে নির্ধারিত আসনেরও অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। সব যাত্রী নিয়েই ট্রেনটি রাজশাহী স্টেশন ছেড়ে গেছে। নতুন করে আর যাত্রী নেওয়ার মতো জায়গা ট্রেনটিতে অবশিষ্ট ছিল না। আর স্ট্যান্ডিং টিকিট দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে, শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে।

ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার রাতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জিএম মিহির কান্তি গুহ জানান, 'শিক্ষার্থীরা নির্ধাতির ট্রেন মিস করলেও ওই টিকিট দেখিয়ে রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়া অন্য ট্রেনে করে যেতে পারবেন। তাদেরকে কেউ বাধা দেবে না। এ নিয়ে বিক্ষুব্ধ হওয়ার কিছু নেই। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থেই স্ট্যান্ডিং টিকিট দেওয়া হয়েছিল। যাতে তাদের যাতায়াতে কোনো ধরনের সমস্যা না হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বিষয়টি সহনশীলভাবে দেখার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২১
এসএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।