ঢাকা: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মরদেহ সৎকার/অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্নের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) কোনো শ্মশানঘাট নেই। উত্তর সিটি করপোরেশনে হিন্দু ধর্মের কারও মৃত্যু হলে তার মরদেহ সৎকারের জন্য যেতে হয় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শ্মশানঘাটে।
তবে উত্তরের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এই কষ্ট অনেকটা লাঘব হতে চলেছে। খুব শিগগিরই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকা মিরপুরে চালু হতে যাচ্ছে অত্যাধুনিক শ্মশানঘাট। এ বছরেই এর উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম।
সোমবার (১১ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর বনানী মাঠে গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশন আয়োজিত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দুর্গা পূজার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এই সুখবরটি শোনালেন উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি যখন ২০১৯ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব পেলাম, তখন আমার কাছে প্রথম যে ফাইলটি আসে, সেটি ছিলো এই শ্মশানঘাটের আবেদন। তারা সেখানে উল্লেখ করেছিলো- মরদেহ সৎকার করতে হলেই দক্ষিণে যেতে হয়। উত্তরে কোনো শ্মশানঘাট নেই।
তিনি বলেন, সুখবর হচ্ছে, গাবতলী বেড়িবাঁধের পাশে হরিরামপুরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মরদেহ সৎকারের জন্য অত্যাধুনিক শ্মশানঘাট নির্মাণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যেই এর ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে। ভৎস করার জন্য যে সরঞ্জাম প্রযোজন তা আমরা ইউরোপ থেকে আনছি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জন্য আমাদের একটু দেরি হচ্ছে। আশাকরি, এ বছরেই এই শ্মশানঘাটের কাজ শেষ হয়ে যাবে। সুতরাং অন্য কোথাও গিয়ে আপনাদের আর মরদেহ সৎকার করতে হবে না। মিরপুরের পুরোনো শ্মাশনঘাটটি এখন অত্যাধুনিক একটি শ্মশানঘাটে আমরা নির্মাণ করে ফেলেছি।
পূজা মণ্ডপে দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্যে মেয়র আতিক বলেন, আপনারা সুন্দর করে সেজেগুজে এসেছেন। সবাইকে দেখছি, খুব ভালো লাগছে। কিন্তু, দয়া করে আপনারা সবাই মাস্ক ব্যবহার করুন। কারণ, এই মাক্স আপনার সুরক্ষা সবার৷ আমাদের সবাইকে সুরক্ষিত থাকতে হবে। এই করোনা আমাদের মাঝখান থেকে অনেক প্রিয়জনকে কেড়ে নিয়েছে।
আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা যেভাবে করোনার মোকাবিলা করেছি, আশা করছি সবার সহযোগিতায় এই করোনা ভাইরাসকে দূর করতে পারব ইনশাআল্লাহ।
ডেঙ্গু এখন আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে মেয়র বলেন, আমরা এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছি। সবার সহযোগিতায় আমরা এই সমস্যাটিও কাটিয়ে উঠবো। তাই আমাদের সুস্থতার জন্য সামাজিক আন্দোলন দরকার। ১০ টায় ১০ মিনিট, প্রতি শনিবার, নিজের আঙিনা করি পরিষ্কার। তিন দিনে একদিন, জমা পানি ফেলে দিন। মাস্ক আমার, সুরক্ষা সবার। এই হোক আমাদের অঙ্গীকার। নিজের ঘর নিজে পরিষ্কার করব এতে লজ্জার কিছু নেই।
পূজার আয়োজন সম্পর্কে তিনি বলেন, বনানীর এই মাঠটির সংস্কার কাজ চলছিলো। যখন আমাকে বলল, পূজা পরিচালনার জন্য জায়গা প্রয়োজন। সঙ্গে সঙ্গে আমি বললাম, আমি মাঠে জায়গা করে দিচ্ছি।
যারা মাঠের কাজ করছেন তারা বলেছিলো- পূজা হলে অনেকদিন আমরা মাঠের কাজ করতে পারবো না। তখন আমি বলেছি- এখন মাঠের কাজ বন্ধ রাখতে হবে।
তিনি বলেন, এটা আমরা করেছি কারণ, আমাদের ভুলে গেলে চলবে না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিন্তু সব সময় বলেছেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে আমি মনে করি, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে স্বাধীনভাবে এই উত্তর সিটি করপোরেশনসহ অন্যান্য এলাকায় যার যার ধর্ম পালন করতে পারেন।
মেয়র বলেন, ডিএনসিসির পক্ষ থেকে যেখানে পূজামণ্ডপ হচ্ছে সেখানেই দরকার পড়লে লার্ভিসাইড করে দিচ্ছি। ফগিং মেশিন চাইলে দিচ্ছি। ডিএনসিসির পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের ইতোমধ্যেই আমি এই নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি। যাতে করে আমরা সবাই মিলে একটি উৎসবমুখর পূজা উদযাপন করতে পারি।
বাংলাদেশ সময়:২২৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২১
এসজেএ/আরএ