ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

চুরির ঘটনা বলে দেওয়ায় শিশুকে হত্যা

সাভার করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২১
চুরির ঘটনা বলে দেওয়ায় শিশুকে হত্যা

সাভার (ঢাকা): সাভারের আশুলিয়ায় টাকা চুরির ঘটনা দেখে বলে দেওয়ায় মো. ফেরদৌস (১১) নামে এক শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মো. হৃদয় (২২) নামে বাসের এক হেলপারকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সোমবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম।

এর আগে রোববার (১৭ অক্টোবর) দিনগত রাত ১২টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে আজ ভোর সাড়ে ৪টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকা থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ফেরদৌস আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহনে কাজ করতো। সে শেরপুর জেলার সদর থানার মুন্সিপাড়া গ্রামের বাসচালক রইচ উদ্দিনের ছেলে। আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ বালুর মাঠ এলাকায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতো।

আটক হৃদয় আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহনের কন্ডাক্টর ও পলাতক মো. পারভেজ একই পরিবহনের হেলপার।

নিহত ফেরদৌসের বড় বোন রুবিনা বেগম বলেন, আমার বাবা আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহনের চালক। ছোট ভাই ফেরদৌস একটু চঞ্চল প্রকৃতির হওয়ায় তিন দিন আগে ওকে আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহনে কাজে পাঠায়। আজ সকালে বাইপাইল রাস্তা থেকে আমার ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বাসের হেলপার ও কন্ডাক্টর আমার ভাইকে হত্যার পর মরদেহ সড়কে ফেলে রাখে। পরে ভোর রাতে তারাই পুলিশকে খবর দেয়।

পুলিশ জানায়, রাত ১২টার দিকে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে বাইপাইল পৌঁছায় আশুলিয়া ক্লাসিকের সেই বাস। পরে বাসের ভেতর কন্ডাক্টর হৃদয় ও হেলপার পারভেজ ঘুমিয়ে পড়েন। এসময় শিশু ফেরদৌস গাড়িতেই ছিল। ঘুম ভাঙলে পকেট থেকে ৫০০ টাকা খোয়া গেছে বলে জানতে পারেন হৃদয়। এসময় শিশু ফেরদৌস জানায় হৃদয়ের পকেট থেকে পারভেজ টাকা চুরি করেছে। এটা শোনার পর পারভেজ ও হৃদয়ের মধ্যে বাগ-বিতণ্ডা ও মারামারি হয়। এসময় পারভেজ ক্ষিপ্ত হয়ে শিশু ফেরদৌসকে শ্বাসরোধে হত্যা করে।

পুলিশ আরও জানায়, পারভেজ ও হৃদয় মিলেই ফেরদৌসের মরদেহ সড়কে ফেলে রেখে পুলিশকে দুর্ঘটনার খবর দেয়। সাভার হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহে দুর্ঘটনার কোনো চিহ্ন না পেয়ে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করে। পরে ভোর রাতে আশুলিয়া থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। এসময় হৃদয়কে আটক করা গেলেও পারভেজ পালিয়ে যায়।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম বলেন, রাতেই এ ঘটনায় আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহনের কন্ডাক্টর হৃদয়কে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ৫০০ টাকা চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় ওই শিশুকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযুক্ত পারভেজকে আটকের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।