ঢাকা: বাংলাদেশে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রধান শক্তি হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবক বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন।
রোববার (২৪ অক্টোবর) বসুন্ধরার ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের (ইডাব্লিউএমজিএল) কনফারেন্স রুমে কালের কণ্ঠ আয়োজিত ‘দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের অগ্রগতি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সচিব মো. মোহসীন বলেন, বাংলাদেশে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রধান শক্তি হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবক। যেখানে ফায়ার সার্ভিস তিনদিন ধরে একটি শিশুকে উদ্ধার করতে পারে না। সেখানে ভূমিকা রেখেছে স্বেচ্ছাসেবকরা। স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য আমরা ইউনাইটেড নেশন থেকে সিভিল সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছি। এটা শুধু সিভিল সার্ভিসের কারণে পাচ্ছি।
তিনি বলেন, আরবান ডিজাস্টার্স একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এটা কত বড় একটা দুর্ঘটনা, কত বড় ক্ষতি হতে পারে চায়না তার উদাহরণ। ২০১১ সালে একটি ভূ-কম্পন হয়েছিল। চীনের পুরো একটা শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। জাপানে সুনামিতে ১১তলার ওপরে জাহাজ উঠে গিয়েছিল। এই রকম অভিজ্ঞতা আমাদের ১০০ বছরে নেই, এরকম অভিজ্ঞতা আমরা চাই না, তবে অভিজ্ঞতা না থাকলে পলিসি মেকার থেকে সঠিক সময়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা যায় না। কিন্তু আমাদের সেক্টরে একটি সৎ সাহস রয়েছে। একটা সমস্যা হতেই পারে কিন্তু আমাদের জানতে হবে, মুখোমুখি হতে হবে। তাহলেই তো আমরা উদ্বুদ্ধ হবো।
তিনি আরও বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের সবাইকে একসঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। তবে গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। এখানে টাকা কোনো সমস্যা না, গবেষণাকে গুরুত্ব দিতে হবে।
সচিব বলেন, আমাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল রয়েছে। এর প্রধান হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এটির একটি ইনস্টিটিউট তেজগাঁতে হবে। ইতোমধ্যে জমি নেওয়া হয়েছে। এটা হয়ে গেলে দুর্যোগের রিয়াল টাইম সিনারি পাওয়া যাবে।
অধ্যাপক খন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ রোল মডেল। আম্পানে ২৬ লাখ ও সিডরে ১৪ লাখ মানুষকে সরিয়ে আনতে পেরেছিলাম। আরলি ওয়ারনিং সিস্টেমের মাধ্যমে এটা হয়েছে। আর্থিক শৃঙ্খলার জায়গায় আরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আতিকুল হক বলেন, আমরা এখন প্রশিক্ষণ সিস্টেম চালু করেছি। এর মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলছি। সারাদেশে আট লাখ ২০ হাজার কর্মী রয়েছে। এদের দক্ষতা বাড়াতে কাজ চলছে। সরকারের পক্ষে আট লাখ মানুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব নয়। এজন্য আমরা সবার সহযোগিতা নিয়ে কাজ করতে চাই।
পানি সম্পদ ও জলবায়ু পরির্বতন বিশেষজ্ঞ ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা স্থানীয়দের এনকারেজ করতে হবে। ঢাকা থেকে গিয়ে দুর্যোগ মোকাবিলা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, এই বছর খড়ার বছর, গত বছর যে বন্যা হয়েছে সেটা মানুষের সৃষ্টি। বাঁধ ভাঙবে কেন? কারণ এটা রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক মতো হয়নি। রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক থাকলে বাঁধ ভাঙতো না।
গোলটেবিল আলোচনায় সঞ্চালনা করেন ইডাব্লিউএমজিএলের পরিচালক ইমদাদুল হক মিলন।
গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২১
এসএমএকে/আরআইএস