ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

নদীতে ফেলে দেওয়া নবজাতকের মরদেহ মিলল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৫
নদীতে ফেলে দেওয়া নবজাতকের মরদেহ মিলল

বরিশাল: বরিশালের দপদপিয়া সেতু থেকে কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দেওয়া এক নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।  

সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে দিকে সুগন্ধা নদী থেকে ওই নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানিয়েছেন।

তিনি জানান, ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়নের বারইকরণ গ্রামে সুগন্ধা নদীতে এক নবজাতকের মরদেহ ভেসে থাকতে দেখেন জেলেরা। পরে তারা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঝালকাঠি মর্গে পাঠিয়েছে। আনুমানিক ৫/৭ দিন আগে জন্ম নেওয়া নবজাতকের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ সংগ্রহ করা হবে।

ওসি আব্দুস সালাম বলেন, কয়েকদিন আগে এক নবজাতককে নদীতে ফেলে দেওয়ার খবর পেয়েছি। সেই পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এসে মরদেহ শনাক্ত করলে ময়না তদন্ত শেষে হস্তান্তর করা হবে।

গত ১৫ জানুয়ারি বরিশাল নগরের দপদপিয়া সেতু থেকে কীর্তনখোলা নদীতে নবজাতকের মা তাকে ফেলে দেন। নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা ও হয়বৎপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ঐশী আক্তার তার নবজাতক শিশুকে নদীতে ফেলে দেন।

ওই নবজাতকের বাবা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সোহেল আহমেদ জানান, দেড় বছর আগে তার সঙ্গে ঐশী আক্তারের বিয়ে হয়। দূরে চাকরি করা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়। অন্তঃসত্ত্বা হলে ঐশী তাকে ডিভোর্স দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করার ও বাচ্চা নষ্ট করার হুমকি দেন। বেশ কয়েকবার বাচ্চা নষ্ট করতে গিয়েও ব্যর্থ হন। গত ১০ জানুয়ারি বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ঐশী। প্রসবের পর থেকেই নবজাতকের বিষয়ে উদাসীন ছিলেন তিনি।

এরপর নবজাতকসহ ঐশীকে বরিশাল নগরের আলেকান্দা এলাকায় বোনের বাসায় নেওয়া হয়। গত ১৫ জানুয়ারি ঐশী সন্তানকে নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বের হয়ে যান। পরে সন্তান ছাড়া বোনের বাসায় ফিরে আসেন এবং জানান যে, সন্তানকে কীর্তনখোলা নদীর উপর নির্মিত সেতু থেকে নিচে ফেলে দিয়েছেন। এ খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ও কোতয়ালি মডেল থানার এক এসআই গিয়ে তার কাছে বিস্তারিত জানতে চান। কিন্তু তাদের সঠিক কোনো তথ্য দেননি।

নবজাতকের বাবা সোহেল আহমেদ আরও জানান, সোমবার মরদেহ পাওয়ার খবর পেয়ে তিনি ছুটে আসেন। নবজাতকের পরনে থাকা জামা তার কিনে দেওয়া। ওই জামা দেখে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন এটা তার সন্তান। এ ঘটনায় স্ত্রী ঐশীসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন সোহেল আহমেদ।

কোতয়ালি মডেল থানার এসআই ইব্রাহিম খলিল জানান, নবজাতকের মরদেহ তার বাবা সোহেল আহমেদ প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করেছেন। তারপরেও ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ওই শিশুর পরিচয় নিশ্চিত করা হবে। এ ঘটনায় নবজাতকের বাবা অভিযোগ দিয়েছেন। বরিশাল নগরের একটি বেসরকারি মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি থাকা নবজাতকের মা কোথাও যেন যেতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৫
এমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।