ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ফরিদপুর-কুয়াকাটা চার লেন: জমি অধিগ্রহণে ব্যয় কম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২১
ফরিদপুর-কুয়াকাটা চার লেন: জমি অধিগ্রহণে ব্যয় কম

বরিশাল: ফরিদপুর থেকে কুয়াকাটা চার লেন মহাসড়কের বরিশাল নগর অংশের বিকল্প ব্যবস্থায় (বাইপাস সড়ক) অধিক জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হলেও কম ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সেইসঙ্গে সড়কের নিরাপত্তা বাড়ানো, শহরের পরিবেশ দূষণ (শব্দ ও বায়ু) এড়ানো সম্ভব হবে এবং যাতায়তেও সময় সাশ্রয় হবে।

সোমবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে বরিশাল নগরের সিঅ্যান্ডবি রোডস্থ সড়ক ভবন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা (এন-৮) জাতীয় মহাসড়ক চার লেন উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্পের বরিশাল শহর অতিক্রমকারী অংশের অ্যালাইনমেন্ট নির্ধারণের জন্য অংশীজন সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।

সভার একটি উপস্থাপনের তথ্যানুযায়ী বর্তমান অ্যালাইনমেন্ট অনুযায়ী বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকার অন্তর্ভুক্ত নগর অংশের মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ১০.২০ কিলোমিটার রয়েছে। সেখানে প্রস্তাবিত বিকল্প সড়কের সম্ভাব্য দৈর্ঘ্য ১১.৩০ কিলোমিটার হতে পারে।

প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী বিদ্যমান অ্যালাইনমেন্ট (বর্তমানে থাকা দুই লেনের মহাসড়ক) বরাবর সার্ভিস লেনসহ চার লেন সড়ক নির্মাণ করতে হলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আগের অধিগ্রহণকৃত ভূমির সঙ্গে ৪০ একরের মতো ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে। আর সেখানে ২০১৭ সালের ভূমি অধিগ্রহণের নীতিমালা অনুযায়ী দেড় হাজার কোটি টাকা অধিগ্রহণ বাবদ ক্ষতিপূরণে খরচ করতে হবে। তবে নগর অংশের বিকল্প সড়ক নির্মাণে অধিগ্রহণ করতে হবে ১১৮ একরের মতো ভূমি। সেখানে ভূমি অধিগ্রহণে সম্ভাব্য ক্ষতিপূরণ মূল্য ধরা হয়েছে ৮১০ কোটি টাকা।

এদিকে বরিশাল নগরকে বাইপাস করে জরিপকৃত অ্যালাইমেন্ট বরাবর চার লেন সড়ক নির্মাণে অসুবিধার মধ্যে কৃষিসহ বেশি পরিমাণ ভূমি অধিগ্রহণ ও নির্মাণ ব্যয় বাড়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সুবিধার মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে তুলনামুলক কম দামি ভূমি অধিগ্রহণ, কম দাম ও কম অবকাঠামোর কারণে কম ক্ষতিপূরণ দেওয়া যাবে। সেইসঙ্গে সড়ক নিরাপত্তা বাড়বে, শহরের সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রাখা যাবে, শহরের পরিবেশ দূষণ (শব্দ ও বায়ু) এড়ানো সম্ভব হবে এবং যাতায়তেও সময় সাশ্রয় হবে।

আর শহরের বর্তমান অ্যালাইনমেন্ট বরাবর চার লেন সড়ক নির্মাণে কৃষিসহ কম ভূমি অধিগ্রহণ ও কম নির্মাণ ব্যয়ের সুবিধা পাওয়া যাবে। তবে অসুবিধাগুলোর মধ্যে বিদ্যমান সড়কের পাশে তুলনামূলক দামি অবকাঠামো অধিগ্রহণ, তুলনামূলক অধিক দামি ভূমি অধিগ্রহণ করার পাশাপাশি শহরের সৌন্দর্য হানি ঘটার সম্ভবনা ও শহরের শব্দ ও বায়ু দূষণ বাড়ার মতো বিষয় রয়েছে। সেইসঙ্গে এখানে সড়ক নিরাপত্তার বিষয়ে অধিক সতর্কও থাকতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

এদিকে এ সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপ-সচিব মো. সামীমুজ্জামান জানিয়েছেন, ফরিদপুর থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়ক চার লেন উন্নীতকরণের জন্য বরিশাল মেট্রোপলিটনের যে অংশ অধিগ্রহণ করা হবে তা অবশ্যই বাইপাস সড়ক নির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে করা হবে। বরিশাল নগরের ভেতর দিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ কঠিন বিষয়। তাই যাতে বাইপাস সড়ক হয় সে লক্ষ্যে অংশীজন সভার আরও আগ থেকে কাজ করা হচ্ছে।

এ সময় দ্রুত ভূমি অধিগ্রহণ শুরু হলে আগামী বছরের যে কোনো সময় সড়কের কাজ শুরু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

অপরদিকে সওজ বরিশাল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মো. তারেক ইকবাল বলেন, বরিশাল নগরবাসী সব সময় বাইপাস সড়কের কথা বলে আসছে। এ বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি ভূমি অধিগ্রহণে আমাদের সহায়তা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।

যদিও নগরের কিছু কিছু স্থানে বর্তমানে সড়ক প্রসস্থ করার প্রয়োজন রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সাগরদী এলাকার সরু ব্রিজটির কারণে সেখান প্রায়ই তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। যা নিয়ে সিটি মেয়রের সঙ্গে কথা হয়েছে। সেখানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত জায়গা নেই, আবার খালের জায়গাও দখল করা হয়েছে এসব বিষয়ে মেয়রকে জানানো হয়েছে। তিনি সহায়তা করলে ব্রিজের দু্’পাশে আমরা স্ট্রিল ব্রিজ করে দেব। ফলে সেখানে সৃষ্ট যানজট কমে যাবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ, রোড জিজাইন ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী বুলবুল হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিশিষ্ট জন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২১
এমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।