ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ডেন্টালে ভর্তির আশ্বাসে প্রতারণা জবি ছাত্রের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২১
ডেন্টালে ভর্তির আশ্বাসে প্রতারণা জবি ছাত্রের প্রতারক জবি ছাত্র মুসা আনসারী

ঢাকা: ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষায় ফলাফল খারাপ হলেও চান্স পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাসে দিয়ে এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মুসা আনসারী নামে এক প্রতারক।

পুলিশ জানিয়েছে, আবু মুসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী।

নিজেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ডেন্টালে ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থীর পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। এ জন্য প্রথমে ভুক্তভোগীর বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে দুই লাখ টাকা নেন। এরপর আরও টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছিলেন প্রতারক মুসা আনসারী।

পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার (২৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর গেণ্ডারিয়া থানার নারিন্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের গোয়েন্দা সদস্যরা (ডিবি)।

অভিযানকালে তার কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসির) ২টি ভুয়া পরিচয়পত্র, একাধিক ভুয়া এনআইডি কার্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু ছাত্র/ছাত্রীদের প্রবেশপত্রের কপি জব্দ করা হয়।

সোমবার (২৫ অক্টোবর) ডিবির ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী গত ১০ অক্টোবর ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। পরবর্তীতে গত ১২ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়। এরপর ফেসবুকে প্রতারক মুসা আনসারীর সঙ্গে ভুক্তভোগীর পরিচয় হয়। মুসা নিজেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দেন। পরে ভুক্তভোগীর রোল নম্বর নিয়ে তাৎক্ষণিক চেক করে জানান, তার পরীক্ষার ফলাফল ভালই হয়েছে এবং সরকারিভাবে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনিয়মের কারণে তাকে সুযোগ না দিয়ে অন্য কাউকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি যদি মেয়েকে ডেন্টালে ভর্তি করতে চান, তাহলে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে।

কিন্তু ভুক্তভোগী পরিবার তাদের কাছে এত টাকা না থাকার কথা জানালে মুসা বলে ‘এখন দুই লাখ দেন, বাকি টাকা ভর্তির পরে দিলে হবে’।

তিনি বলেন, অভিযুক্তের কথা বিশ্বাস না করায় তখন ভুক্তভোগীর ইমো আইডিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের Nabiul Hasan Samsu Assistant Secretary পরিচয়পত্র পাঠিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে ভিকটিমের মনে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য মোবাইলে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে ফেক চ্যাটিং স্ক্রিনশট পাঠায়।

এমন পরিচয়পত্র দেখে ভুক্তভোগী কিছুটা আশ্বস্ত হন এবং যাত্রাবাড়ী থানার শহীদ ফারুক সড়কের রেটিনা কোচিং সেন্টারের সামনে মুসার সঙ্গে দেখা করে দুই লাখ টাকা দেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, টাকা দেওয়ার পরের দিন মুসাকে ফোন দিয়ে রেজাল্টের বিষয়ে জানতে চাইলে সে জানায়, আজকের মধ্যেই উপরের মহলে আরও এক লাখ টাকা দিতে হবে নতুবা তার মেয়ের রেজাল্ট আগেরটাই বলবৎ থাকবে। তখন মুসার কথাবার্তা কিছুটা সন্দেহজনক মনে হলে তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে বুঝতে পারেন।

অপরদিকে মুসা ভুক্তভোগীর কাছে টাকার জন্য বারবার ফোন এবং মেসেঞ্জারে ভয়-ভীতি ও হুমকি দিতে থাকেন। বলেন, টাকা না দিলে মেয়েকে কোথাও ভর্তি হতে দেবে না।

এ ঘটনায় গত শনিবার (২৩ অক্টোবর) যাত্রাবাড়ী থানায় ভুএকটি মামলা দায়ের করেন ক্তভোগী। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তের জন্য গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। এরপর গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রোববার রাতে প্রতারক মুসা আনসারীকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মুসা জানিয়েছে, অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে সে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে।

বাংলাদেশ সময় : ১৯১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২১
এসজেএ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।