ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রথা-বৈষম্যের কারণে নারীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত: শেখ হাসিনা

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২১
প্রথা-বৈষম্যের কারণে নারীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত: শেখ হাসিনা

গ্লাসগো (স্কটল্যান্ড) থেকে: উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সামাজিক রীতিনীতির সঙ্গে মানব সমাজে বিদ্যমান বৈষম্যের কারণে নারীদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব বেশি পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) গ্লাসগোতে ‘উইমেনস ক্লাইমেট লিডারশিপ ইভেন্ট- কপ২৬: উইমেন অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।



প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সাধারণত বিশ্বে নারীরা সম্পদের সমান অধিকার পায় না। এর বাইরে অনেক সমাজে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকে না এবং প্রায়ই তাদের কম বেতনে এমনকি বিনা বেতনে কাজ করতে হয়। এসব বিষয়গুলোর কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের খারাপ পুরুষের চাইতে নারীদের ওপর বেশি পড়ে।

শেখ হাসিনা বলেন, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আর্থ-সামাজিক এবং সংস্কৃতিক বিষয়ের কারণে বিশ্বের বেশির ভাগ দুর্বল ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নারীরা এর মধ্যে অন্যতম।

নারী-পুরুষ সমানভাবে অংশ নিতে পারে এমন একটি সমাজ গড়ে তুলতে এই কপ সম্মেলন থেকে একটি সাহসী ও দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে নারীদের দুর্বলতাগুলো মোকাবিলায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাদের জন্য জায়গা তৈরি করাটা জরুরি।

শেখ হাসিনা বলেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ একেবারে তৃণমূল থেকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করেছে।
অভিযোজন সমাধানের জন্য বাংলাদেশের ন্যাশনাল অ্যাডাপ্টেশন প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন (এনইপিএ) ব্যাপকভাবে লিঙ্গকে অন্তর্ভুক্ত করেছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন-সম্পর্কিত নীতি ও কৌশলে লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করতে আমরা জাতীয় জলবায়ু পরিবর্তন এবং জেন্ডার অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান হালনাগাদ বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল এবং কর্মপরিকল্পনায় (বিসিসিএসএপি) জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ব্যবহারিক ও কর্মমুখী কর্মসূচির অন্যতম কৌশলগত ক্ষেত্র হিসেবে জেন্ডারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশে তার সরকার ‘জেন্ডার রেসপন্সসিভ বাজেটিং’ চালুর কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, বৈজ্ঞানিকভাবে এটাই সত্য যে, নারীরা পুরুষের চেয়ে বেশি সহিষ্ণু। এমনকি সবচেয়ে কঠিন প্রাকৃতিক দুযোর্গগুলোতেও পরিবার ও গৃহের পরিচর্যার জন্য নারীরাই প্রথম বাড়ি ফিরে যায়।

দুযোর্গ মোকাবিলায় বাংলাদেশে ৭৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক আছে যাদের ৫০ শতাংশই নারী জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পলিসি তৈরি থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ে সবখানে আমরা নারীদের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছি।

দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচির মাধ্যমে মৃত্যু হ্রাসে বাংলাদেশ সফল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ৫০ বছর আগে একটি ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ৫ লাখ মানুষ মারা গেছেন। সেখানে এক বছর আগে সে রকম একটি ঘূর্ণিঝড়ে কয়েকশ মানুষ মারা গেছেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান’ বাস্তবায়ন করছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্লাইমেট বিপদগ্রস্ত দেশ থেকে জলবায়ু সহিষ্ণু এবং সেখান থেকে জলবায়ু সমৃদ্ধির পথে যেতে এই পরিকল্পনায় নারীদের শক্তিশালী ভূমিকা রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে ভবিষ্যতের সঙ্গে যুক্ত করার এটাই উপযুক্ত সময় যেখানে নারী ও পুরুষ উভয়েরই অন্তর্ভুক্তি থাকবে। এজন্য আমাদের অবশ্যই বিভিন্ন জলবায়ু সংক্রান্ত নীতিতে নারীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যায় নারীদের চাহিদা এবং অগ্রাধিকারগুলোকে মোকাবিলায় নারীদের জন্য অর্থের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আর এজন্য সারা বিশ্বের নারীদের সোচ্চার হওযার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন>>

>>> প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন বিল গেটস

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০২১
এমইউএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।