ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

লঞ্চশূন্য সদরঘাটে আটকা হাজারো যাত্রী

মহিউদ্দিন রিফাত, জবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০২১
লঞ্চশূন্য সদরঘাটে আটকা হাজারো যাত্রী

ঢাকা: ভাড়া বৃদ্ধির দাবি না মানায় যাত্রীবাহী লঞ্চ অভ্যন্তরীণ নৌপথে না চালানোর ঘোষণা দিয়েছে লঞ্চ মালিকেরা। হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় লঞ্চঘাটে এসে আটকা পড়েছেন হাজারো যাত্রী।

 

শনিবার (৬ নভেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে এমন চিত্র দেখা যায় লঞ্চঘাটে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লঞ্চশূন্য হয়ে আছে সদরঘাট টার্মিনাল। টার্মিনালে কোনো লঞ্চ নেই। লঞ্চের অপেক্ষায় রয়েছেন অনেক যাত্রী। আবার কেউ কেউ বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজছেন।

লঞ্চ না পেয়ে হাতাশা প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। অনেকে আবার আহাজারি করছেন। এমনই একজন নাজমা বেগম। আহাজারি করে তিনি বলেন, ‘আমি মনে হয় মায়ের মুখখানা শেষবারের মতো দেখতে পাবো না। মা তুমি মাফ করে দিও। শেষবারের মতো আমি তোমার মরা মুখখানিও দেখতে পারছি না। ’  

তিনি বলেন, ‘গাজীপুর থেকে বরিশাল যাওয়ার জন্য এসেছি। আমার মা মারা গেছে। হরতালের কারণে বাস বন্ধ থাকায় সদরঘাট এসে বসে আছি দুপুর থেকে। এখনও কোন লঞ্চ নাই ঘাটে। জানি না মায়ের মুখখানা দেখতে পারব কি না। ’

সদরঘাটে এসে ভোগান্তিতে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীরাও। পরীক্ষা দিতে এসে আটকা পড়েছেন তিনজন। তারা বাংলানিউজকে বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের পরীক্ষা ছিল ৭ তারিখে। আমরা দুইদিন আগে এসে এলাকার এক ভাইয়ের মেসে ছিলাম। হঠাৎ পরীক্ষার তারিখ পিছিয়ে দেওয়াতে আমাদের এখন গ্রামে ফিরে যেতে হচ্ছে। কিন্তু গাড়িও চলে না, লঞ্চও চলে না। কীভাবে বাড়ি যাবো বুঝতে পারছি না।

ব্যবসার কাজে ঢাকায় আসা হায়দার আলী নামের এক ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, আমি ঢাকায় এসেছিলাম দোকানের জন্য শীতের কাপড় কিনতে। এসেই আটকা পড়েছি। দোকানের মাল কিনে গাটি বেঁধে বসে আছি, ফেরার উপায় নাই। ’

হঠাৎ লঞ্চ বন্ধ করে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত কালকেই ছিল। সরকার আমাদের দাবি না মানায় আজ দুপুর ১২টা থেকে তা কার্যকর করা হয়েছে।  

যাত্রীদের আটকা পরার বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার যদি যখন তখন লঞ্চ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে, আমরা কেন পারব না। করোনার মধ্যে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে, সরকার আমাদের এক টাকাও লোন, প্রণোদনা দেয়নি। আমাদের স্টাফদের বেতন দিতে হয়। আমাদের কথা তো কেউ ভাবে না। তাহলে আমরা কেন সবার কথা ভাবব?

তিনি আরও বলেন, আমরা তো পথের ফকির আমাদের পেটে কেন লাথি দেওয়া হয় বারবার? যারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে যায়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। জনগনের কথা কে ভাবে? কেউ ভাবে না। হঠাৎ করে তেলের দাম বাড়ানোর কি যুক্তিকতা আছে?

আরও পড়ুন: 
ব‌রিশাল থেকে ছাড়ছে না লঞ্চ

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০২১
জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।