ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সেই ‘লেডি বাইকার’ রিয়াকে নিয়ে তোলপাড়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২১
সেই ‘লেডি বাইকার’ রিয়াকে নিয়ে তোলপাড়

ঢাকা: রিয়া রায়। সিলেট নগরীর কুমারপাড়ার মন্দিরগলির ঝর্ণারপাড় এলাকার ৬২/এ-এর বাসিন্দা রামু রায়ের মেয়ে।

অনলাইন জগতে লেডি বাইকার নামে পরিচিত। তরুণীদের মোটরসাইকেল চালাতে তিনি উদ্ধুদ্ধ করেন ভিডিওবার্তায়। নিজে টিকটক ভিডিও তৈরি করে ছড়িয়ে দেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। উশৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত। তবে এবার ফেঁসে গেছেন। বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে মাদক কারবারে নামার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। গত বোরবার (৭ নভেম্বর) রাতে পুলিশের হাত ফসকে বেরিয়ে গেছেন তিনি। তবে তার বয়ফ্রেন্ডকে আটক করে পুলিশ পাঠিয়েছে জেলহাজতে। এখন পুলিশ হন্য হয়ে খুঁজছেন রিয়াকে।

জানা গেছে, প্রাইভেটকার থেকে মাদক উদ্ধারের ঘটনায় রিয়া ও তার বয়ফ্রেন্ড সামির বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছে পুলিশ।  

সোমবার (৮ নভেম্বর) পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। মাদক মামলায় ইতোমধ্যে গ্রেফতার রিয়া রায়ের বয়ফ্রেন্ড আরমান সামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উশৃঙ্খল এবং বিলাসী জীবনযাপনের পাশাপাশি সামি ও রিয়া দুজনই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। চতুর সামি তার গার্লফ্রেন্ড রিয়াকে বাঁচানোর জন্য রোববার রাতে পুলিশের সিগন্যালে না থেমে কিছুটা দূরে গিয়ে রিয়াকে নিরাপদ আশ্রয়ে ছেড়ে পুলিশের কাছে ধরা দেন। রিয়াকে নিরাপদ আশ্রয়ে ছেড়ে দিলেও তাদের ব্যবহৃত প্রাইভেট গাড়িতে থেকে যায় মাদক। এরপর পুলিশ গাড়িটি তল্লাশি করে ইয়াবা, মদ ও গাঁজা উদ্ধার করে। গ্রেফতার আরমান সামি নগরীর মিরাপাড়ার ১৪৯/বি নম্বর বাসার শামসুল ইসলামের ছেলে। আর রিয়ার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের ষোলঘর এলাকায়।

সিলেট মেট্রোপলিট্ন পুলিশের (এসএমপি) বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মুহাম্মদ মাইনুল জাকির জানান, রোববার রাতে রিয়া বয়ফ্রেন্ড আরমান সামিকে নিয়ে সিলেটের এয়ারপোর্ট-সংলগ্ন এলাকায় যান। নীল রঙের একটি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো খ ১৪-০৫১২) নিয়ে এদিক-সেদিক ঘুরছিলেন তারা। টহল পুলিশের সন্দেহ হলে গাড়িটি থামানোর সংকেত দেওয়া হয়। একটু দূরে গিয়ে থামে গাড়িটি। তখন গাড়ি থেকে এক তরুণী দ্রুত নেমে যান।
 
তিনি বলেন, রিয়ার বয়ফ্রেন্ড আরমান সামিকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।  

এরপর আরমান সামি থানায় গিয়ে জানান, পালিয়ে যাওয়া তরুণী রিয়া রায়। তিনি সিলেটে লেডি বাইকার নামে পরিচিত। এ সময় পুলিশ গাড়ি তল্লাশি করে একটি পানির বোতলে রাখা বিশেষ মদ ৫০০ মিলিগ্রাম, ১০ পিস ইয়াবা ও দুই পুড়িয়া গাজা উদ্ধার করে।

মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওসি খান মুহাম্মদ মাইনুল জাকির জানান, সোমবার (৮ নভেম্বর) সকালে গ্রেফতার হওয়া আরমান সামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে মাদক উদ্ধারের ঘটনায় এয়ারপোর্ট থানার এসআই গৌতম চন্দ্র দাশ বাদী হয়ে রিয়া ও আরমান সামিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আসামি রিয়া ঘটনার পর থেকে পলাতক। তাকে গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

এদিকে, সিলেটের লেডি বাইকার হিসেবে পরিচিত রিয়াকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মঙ্গলবার দিনভর তোলপাড় চলে, অনেকে করেছে নানা নেতিবাচক মন্তব্য। তারা তদন্তসাপেক্ষে রিয়া ও সামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

ফেসবুকে অনেকেই বলেছেন, রিয়ার শাস্তি দেখে যাতে আর কোনো ঘরের মেয়ে এমন ‘উশৃঙ্খল লেডি বাইকার’ হওয়ার দুঃসাহস না দেখায়।

আরও পড়ুন>>

>>> লেডি বাইকারকে খুঁজছে পুলিশ, মাদকসহ গ্রেফতার প্রেমিক

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২১
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।