ফরিদপুর: পেটে কাঁচি রেখেই অপারেশন শেষ করার অভিযোগ উঠেছে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। অপারেশনের দেড় বছর পর এক্সরের মাধ্যমে তার পেটের ভেতরে কাঁচিটির দেখতে পাওয়া যায়।
এই দেড় বছরেরও বেশি সময় পেটের অসহনীয় যন্ত্রণাভোগের পর এখন মৃত্যু পথযাত্রী মনিরা খাতুন (১৮) নামে ওই তরুণী। এ দীর্ঘ সময় সে শরীর সোজা করে দাঁড়াতেও পারেননি। গত দু’তিনদিনে তার অবস্থা মুমূর্ষু পর্যায়ে পৌঁছানোর পর এক্সরে করলে পেটের ভেতর কাঁচি থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে।
ভুক্তভোগী তরুণী গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়নের ঝুটিগ্রামের কৃষক খাইরুল মিয়ার মেয়ে মনিরা খাতুন (১৮)।
মনিরা খাতুন ২০২০ সালের ৩ মার্চ ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পেটে টিউমার নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। ভর্তির সাতদিন পর তার অপারেশন করা হয়েছিল। তারপর মনিরা সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরে যান।
মনিরার বাবা জানান, এর কিছুদিন পর মেয়েকে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার পৈলানপট্টি গ্রামে বিবাহ দেন তার বাবা। বিয়ের পরেও তার পেটে ব্যথা ছিল। বিয়ের কিছুদিন পর মনিরা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরে পেটের বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়। এ ঘটনার পরে তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন তার স্বামী। গত তিনদিন মনিরা খুব বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে মুকসুদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে এক্সরের মাধ্যমে ডা. দেখতে পান তার পেটে বড় ধরনের একটা ঝকঝকা সার্জিক্যাল কাঁচি।
পরে তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এমন ঘটনায় মনিরার ভাই কাইয়ুম ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের সহযোগিতা নেন।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) রাত ৯টা দিকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ মনিরাকে (ফমেক) হাসপাতালের ৬ তলা সার্জারি পেয়িং বেডে ভর্তি করেন এবং ডাক্তারদের বিষয়টি অবগত করেন।
ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আজ (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে মনিরার পেটে থেকে কাঁচি বের করার জন্য অপারেশন করা হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কাজ করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২১
আরএ