কুমিল্লা: কুমিল্লার সরকারি গণগ্রন্থাগারটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮২ সালে। বৃহত্তর কুমিল্লার প্রধান গণগ্রন্থাগার ছিল এটি।
জানা যায়, ২০১৪ সালের পর থেকে গ্রন্থাগারটির মানোন্নয়নে কাজ করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। এখানে বইয়ের সংখ্যা বাড়ানো হয়। পাঠকদের বসার জন্য সুব্যবস্থা করা হয়। বই রাখার জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবেরও ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি ছোটরা এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রশাসন। তাতেই বদলে যায় দৃশ্যপট। দিন দিন পাঠক বাড়তে থাকে এ গ্রন্থাগারে। বর্তমানে দিনে পাঁচশর বেশি পাঠক আসেন এখানে।
সূত্র জানায়, এ গ্রন্থাগারে ৪৬ হাজারের বেশি বই আছে। ইতিহাস, দর্শন, সাহিত্য, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অসংখ্য বইয়ের পাশাপাশি পত্রিকা পাঠের ব্যবস্থা রয়েছে। শিশু শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এছাড়া পাঠাগারে নারী পাঠকদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুপুরে খাবার খাওয়ার জন্য জায়গা পান পাঠকরা।
পাঠকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিসিএসসহ অন্যান্য চাকরি পরীক্ষায় ব্যাপক প্রতিযোগিতা হয়। তরুণরা বাসায় অতটা মনোনিবেশ করতে না পারায় নিরিবিলি পরিবেশের দরকার হয়। পরিবেশ উপযোগী হওয়ায় তরুণরা গণগ্রন্থাগারমুখী হয়ে পড়ে। চাকরিপ্রার্থী পাঠকদের আগ্রহ বাড়াতে সাধারণ পাঠকদেরও আগ্রহ বেড়ে যায়। ব্যাপকহারে ভিডিও গেমসে আসক্ত হয়ে পড়া প্রজন্মকে ফিরিয়ে আনতে গণগ্রন্থাগারে নিয়ে আসার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেন অভিভাবরা। শিশুদের জন্য আলাদা কর্নার করা হয়। তাতে বদলে যায় গণগ্রন্থাগারের দৃশ্য।
সূত্র জানায়, সারাদেশে ৩৯টি গ্রন্থাগারকে বহুতল ও আধুনিকায়ন করার চিন্তা করছে সরকার। এর মধ্যে কুমিল্লা গণগ্রন্থাগারের বিষয়টি উপরের সারিতে রয়েছে। যেখানে চাকরিপ্রার্থী ও সাহিত্য গবেষণার জন্য আলাদা কর্নার থাকবে। খাবারের ক্যান্টিন থাকবে। সবার জন্য থাকবে নামাজের ব্যবস্থা। আগামী এক বছরের মধ্যে আধুনিকায়নের কাজটি শেষ হতে পারে।
জানা যায়, কুমিল্লার সরকারি গণগ্রন্থাটিরতে লোকবল সংকট আছে। নয়জন লোকবলের বিপরীতে মাত্র দুইজন কর্মরত আছেন এখানে। দিনে যে পরিমাণ পাঠকের চাপ, তা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে। শনি থেকে বুধবার সরকারি নিয়মানুযায়ী সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে এ গণগ্রন্থাগার।
কুমিল্লা সরকারি গণগ্রন্থাগারের সহকারী গ্রন্থাগারিক মো. নাফিস সাদিক শিশির জানান, আমাদের আরও বেশি পাঠককে বসতে দেওয়ার সুযোগ আছে। প্রয়োজনীয় ফার্নিচার, টেবিল-চেয়ার সবই আছে। করোনার কারণে আসন সংখ্যা অর্ধেক করা হয়েছে।
তিনি জানান, কুমিল্লার ঐতিহ্য আছে। এখানকার মানুষরা বই ভালোবাসেন। একসময় পাঠক খরা ছিল। গ্রন্থাগারটিতে এখন পাঠকের স্রোত। এ ধারা অব্যাহত রাখতে নানা প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে চাই, যাতে সবাই এই গণগ্রন্থাগার সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারেন।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, গণগ্রন্থাগার বিষয়ে আমি অবগত আছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২১
আরএ