ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শেবাচিমে রোগী আর স্বজনদের আহাজারি

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২১
শেবাচিমে রোগী আর স্বজনদের আহাজারি শেবাচিমে ভর্তি অগ্নিদগ্ধ কয়েকজন

বরিশাল: আগুনে দগ্ধ হওয়া স্থানের ব্যাথায় ছটফট ও আহাজারি করছে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের আহত যাত্রীরা।   পাশাপাশি নিঁখোজ যাত্রীদের যখন ঝালকাঠিতে খুঁজে না পেয়ে স্বজনরা আসছেন শেবাচিম হাসপাতালে।

এখানেও না পেয়ে তারাও আহাজারি করছেন। ফলে রোগী আর স্বজনদের আর্তনাদে সময় যত বাড়ছে হাসপাতালের পরিবেশ ততই ভারি হয়ে উঠছে।

হাসপাতালের পুরুষ, মহিলা ও শিশু সার্জারি ওয়ার্ডের সর্বত্রই দগ্ধের যন্ত্রনায় আর্তনাদ করেছে আহতরা।

চিকিৎসকরা জানান, বেশকিছু রোগী ৫০ ভাগ দগ্ধ হয়েছেন। আর এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ ভাগ দগ্ধ তিন শিশুসহ ৫ জনকে ঢাকা বার্ন হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। যার মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

এছাড়া শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেশ কয়েকজন রোগীর জরুরি ভিত্তিতে রক্তের প্রয়োজনও হতে পারে বলে  জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ভোর  সাড়ে ৫টা থেকে হাসপাতালে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এম‌ভি অভিযান-১০ লঞ্চের আগুনে দগ্ধ রোগীরা আসতে শুরু করেন। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ৭২ জন রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডের ৩ ও ৪ নং ইউনিটে ৪০ জন, মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ২০ জন, শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে ৭ জন এবং অর্থপেডিক্স ওয়ার্ডে ৫ জন ভর্তি হয়েছেন।

হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম আজাদ জানান, বর্তমানে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে  ভর্তি ৭২ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ঢাাকায় পাঠানো হয়েছে। আর ঢাকা যাওয়ার পথে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

সকাল ১০টার দিকে সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফেরদাউস আহম্মেদ ও শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তৈহিদুল ইসলাম ভর্তি অগ্নিদগ্ধদের
পর্যবেক্ষণ শেষে ৩ শিশুসহ ৫ জনকে ঢাকা বার্ন হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

ডা. ফেরদাউস আহম্মেদ বলেন, লঞ্চে অগ্মিকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত যারা দগ্ধ হয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেরই ৫০
শতাংশেরও বেশি পুড়ে গেছে। এর মধ্যে গুরুতর দুই রোগীকে ঢাকা বার্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অশঙ্কাজনক রয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।

আর ডা. তৈহিদুল ইসলাম জানান, শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে দগ্ধ ৭ শিশুকে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে অবস্থা খুবই গুরুতর হওয়ায় তাইফা, তামিম ও মাহিনুর নামে তিন শিশুকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। ওদের বয়স ৫ থেকে ৭ বছর।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানান, জরুরি বিভাগে সবল রোগীকে ফ্রি টিকিটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ, স্যালাইন, অক্সিজেন, বালিশ, বিছানা, কম্বল সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া ব্লাড ডোনেশন ক্লাব গুলোকে রক্ত সরবরাহের জন্য বলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক না থাকায় দীর্ঘ দিন আমাদের বার্ন ইউনিট বন্ধ রয়েছে। তবে সার্জারি ওয়ার্ডে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের সব চিকিৎসক ও নার্স এবং স্টাফদের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪,২০২১
এমএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।