ঢাকা: প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছর পেরিয়ে ছয় বছরে পা দিল দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এফএম রেডিও স্টেশন ‘রেডিও ক্যাপিটাল’। এ উপলক্ষে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।
রোবরার (২ জানুয়ারি) সকালে কেক কেটে বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম এর সম্পাদক জুয়েল মাজহার, নিউজটোয়েন্টিফোরের হেড অব নিউজ রাহুল রাহাসহ ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড ও রেডিও ক্যাপিটালের কর্মীরা।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, টেকনোলজি এগিয়ে যাচ্ছে। এ প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে হবে। এগিয়েই প্রমাণ করতে হবে আমরা এ জায়গাটুকু তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি।
রেডিও ক্যাপিটালের কর্মী, শ্রোতা ও শুভানুধ্যায়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, সামনে আরও নতুন নতুন টেকনোলজি আসবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ রেডিও সংযোগের জন্য চিন্তা ভাবনা করছে। তাই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হলে টেকনোলজির প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে। অনুষ্ঠানে রেডিও ক্যাপিটালের সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী বলেন, এক সময় জনমানুষের মাধ্যম ছিল রেডিও। আমি আগে থেকেই শুনে আসছি। আজকের এফএম ব্যান্ডগুলো অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আমি গাড়িতে যখন বসি তখন রেডিও শুনি। আমার মতো অনেকেই এ রেডিও শোনে। না শুনলে দিন দিনে এসব এফএম রেডিও বিস্তৃত হতো না। মানুষের জনপ্রিয়তা পেতো না। এটা আছে বলেই গুণীজনদের কথাগুলো সহজে শুনতে পাই।
রেডিও ক্যাপিটাল এফএম এর পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের পরিচালক ও কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, রেডিও অনেক পুরনো মাধ্যম। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন করছি। যারা ১৯৭১ দেখেছেন তাদের মনে আছে। সেই সময় স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র আমাদের কীভাবে উজ্জীবিত করেছিল। সেই রেডিও সন্ধ্যায় শুরু হতো। তখন রেডিও শোনার জন্য গ্রাম-গঞ্জের মানুষ অপেক্ষা করতো। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের খবর পাওয়ার জন্য সেসময় বহু মানুষ রেডিও শুনতো। তখন স্বাধীনতার পক্ষের ও বিপক্ষের মানুষ রেডিও শুনতেন। তারা তখন এ রেডিওর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের অবস্থা সম্পর্কে জানতেন। এই উদ্দীপনাটা আমাদের ব্যাপকভাবে জাগিয়ে রেখেছিল।
স্মৃতিচারণ করে ইমদাদুল হক মিলন আরও বলেন, তখন রেডিও ছাড়া আসলে কিছু ছিল না বিনোদনের। বাংলাদেশ টেলিভিশন শুরু হলো ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর প্রতিদিন দু ঘণ্টা করে সেখানে অনুষ্ঠান সম্প্রচার হতো। সোমবার বন্ধ থাকতো।
তিনি বলেন, আমরা রেডিও শুনে বড় হয়েছি। তখন এতে আমরা গান শুনতাম খবর শুনতাম। দিনে দিনে রেডিওর চেহারাটা বদলে গেছে। আধুনিক সময়ে এসে রেডিও নানান দিকে বিস্তৃত লাভ করেছে। সেই বিস্তৃতির অংশীদার হয়েছে রেডিও ক্যাপিটাল।
বাংলানিউজের সম্পাদক জুয়েল মাজহার বলেন, আমাদের জীবনে রেডিওর যে ভূমিকা ছিল, এখন সেই ভূমিকার একটু পরিবর্তন হয়েছে। আগে পারিবারিক জীবনে বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম ছিল রেডিও। আগে টেলিভিশন ছিল না। এখন যোগাযোগের যেসব মাধ্যম এসেছে সেগুলো আগে ছিল না। তখন বিনোদন ও সংবাদ জানার একমাত্র মাধ্যম ছিল রেডিও। আগে রেডিওতে অনুরোধ করে চিঠি লিখে গান শোনা যেতো। পছন্দের গান শুনতে চিঠি লিখলে সেগুলো সম্প্রচার করা হতো।
নিউজটোয়েন্টিফোরের হেড অব নিউজ রাহুল রাহা বলেন, রেডিও নিয়ে আমাদের যে বিস্ময় আর ফ্যান্টাসির মজা ছিল, ভিজ্যুয়াল মিডিয়া আসায় তা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কারণ রেডিওতে শুধু কণ্ঠ শুনে আমরা অনেক কিছু কল্পনা করে নিতে পারতাম। একটা জগৎ তৈরি করে নিতে পারতাম। দেশে এফএম রেডিও চালু হওয়ায় সেই বিষয়গুলো আবার ফিরে এসেছে। এটা ভালো দিক।
তিনি রেডিও ক্যাপিটালের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।
এরপর কেক কেটে রেডিও ক্যাপিটালের পাঁচ বছর পূর্তি উদযাপন করা হয়।
শেষে আরজে ‘নাট-বল্টু’ কৌতুক পরিবেশন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২২
আরআইএস