ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিয়ের প্রলোভনে তিন বছর ধরে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২২
বিয়ের প্রলোভনে তিন বছর ধরে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ

বরগুনা: বরগুনার তালতলী উপজেলায় বিয়ের প্রলোভনে এক নারীকে তিন বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া তার দেড় লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন অভিযুক্ত মো. মিলন  (৩০) নামে এক যুবক।

 

মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় তালতলী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে বনিবনা না হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয় ৩২ বছরের ওই নারীর। তিনি দুই সন্তানের জননী। ঢাকার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ফিজিওথেরাপির কাজ করতেন। সেখানে কাজ করার সুবাদে পরিচয় হয় উপজেলার করমজাপাড়া এলাকার মৃত গোলাম মস্তফার ছেলে মিলনের সঙ্গে। পরে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় একটি বাসা ভাড়া করে তার সঙ্গে ২০১৯ সালে থেকে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় প্রায় তিন বছর ধরে সংসার ও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন মিলন। ওই নারীর টাকায় মিলন ঢাকায় লেখাপড়া করেন বলেও জানান তিনি।

পরে ভুক্তভোগী নারীর কাছ থেকে মিলন তার নিজ বাড়িতে নতুন ঘর তৈরি করে বিয়ের কথা বলে এককালীন দেড় লাখ টাকা নেন। ঘর তৈরি করে মিলন ফের ঢাকা গিয়ে ওই নারীর কাছে থাকেন। সোনিয়া (ছদ্মনাম) মিলনকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে মা ও বোন পরিচয়ে দুই নারীকে গ্রাম থেকে ঢাকা নিয়ে আসেন। পরে ঢাকার রামপুরা বাজারে মিলনের সঙ্গে দেখা করতে গেলে ওই দুই নারীর সঙ্গে সোনিয়াকে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে তারাও বিয়ের কথা বলে আমাকে সান্ত্বনা দেন।

এরপর মিলন চিকিৎসক দেখানোর কথা বলে চলে যান। এরপর আর কোনো যোগাযোগ করেননি। পরে মোবাইল ফোনে বিয়ের কথা বললেই শুরু হয় মিলনের বিভিন্ন টালবাহানা। এক পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের সামনে মিলনকে মুখোমুখি করা হলে তিনি বলেন, আমাকে তিনি বিয়ে করতে পারবেন না। আমার কাছ থেকে বিগত দিনে যে টাকা-পয়সা নিয়েছে, তা অস্বীকার করেন এবং তারই বন্ধু মিজানুর রহমান সবুজ আমাকে ডেকে নিয়ে কিছু টাকা নিয়ে মীমাংসা হয়ে যেতে বলেন। আমি তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও জীবন নাশের হুমকি দিয়ে আসছেন তারা।

এ ব্যাপারে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে গত বছরের ৯ মে একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। ওই মামলার আইনজীবী নিয়োগ করা হয় হাসিবুর রহমানকে। তার সহযোগী মো. খোকনের বন্ধু মিলন। এজন্য আইনজীবী আমার সঙ্গে মামলা নিয়েও প্রতারণা করেন। মামলায় বিচার পাওয়ার ধারা সঠিকভাবে উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়াও আমাকে যে মিলন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বছরের পর বছর স্ত্রী হিসেবে ব্যবহার করেছেন, সেটাও মামলায় তেমনভাবে উল্লেখ করেননি। এজন্য আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মিলনের মোবাইল নম্বরে কল দিলে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীর নারীর বিষয়ে জানতে চাইলে কলটি তিনি কেটে দেন। এরপরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।  

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান বলেন, ভুক্তোভোগীর নারীর ঘটনা সম্পূর্ণ সত্যি ছিল। তবে আদালত মনে করছে মামলাটি মিথ্যা। এজন্য হয়তোবা মামলা খারিজ করেছেন। এর বেশি আদালতের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।

তবে মামলাটির ধারা ও তার মহরি খোকনের বন্ধু মিলন হওয়াতে মামলা লেখায় তেমন কোনো ধারা উল্লেখ করা হয়নি, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে কল কেটে দেন।

এ বিষয়ে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ওই নারী থানায় আসছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন আদালতে মামলা হয়েছে। পরে মামলার কাগজপত্র নিয়ে তিনি আর আসেননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০২২
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।