ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর টিয়ারশেল-লাঠিচার্জ

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২২
শাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর টিয়ারশেল-লাঠিচার্জ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়েছে পুলিশ

শাবিপ্রবি (সিলেট): শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারশেল, ফাঁকা গুলি ও লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে ৩০-৪০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

এর আগে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

পরিস্থিতি সামাল দিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়। তারা সেখানে টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। পুলিশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারীরা।  

রোববার (১৬ জানুয়ারি) বেলা তিনটার দিকে নিজ কার্যালয় থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ আইআইসিটি ভবনে ঢোকার চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা সেখানে তাকে অবরুদ্ধ করে ফেলেন।



ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ডিন, বিভাগীয় প্রধান, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক, হল প্রভোস্টসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সকালেই প্রশাসনিক ভবনে আলোচনায় বসেন। সেখান থেকে প্রতিনিধিদল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যায়। দাবি না মানায় এক পর্যায়ে ‘প্রশাসন ধিক্কার, প্রশাসন ধিক্কার’ স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক সমিতির সভাপতি, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টাসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেওয়া হয় হলের গুণগত মান উন্নয়ন এবং অব্যবস্থাপনার সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান। এজন্য শিক্ষার্থীদের কাছে এক সপ্তাহের সময় চায় প্রশাসন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি না মানা পর্যন্ত সময় বাড়াতে অস্বীকৃতি জানান আন্দোলনকারীরা। পরে প্রশাসনের কথা শিক্ষার্থীরা না শুনলে প্রশাসনিক বডির সদস্যরা সেখান থেকে চলে যাওয়ায় সময় শিক্ষার্থীরা পেছনে পেছনে ‘প্রশাসন ধিক্কার, প্রশাসন ধিক্কার’ বলে স্লোগান দিতে দিতে সামনের দিকে এগোতে থাকেন।

এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের পিছু নেওয়ার পর অর্জুন তলা থেকে উপাচার্য কার্যালয়ের দিকে আসেন। এরপর উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদকে সামনে পান আন্দেলনকারীরা। তখন উপাচার্যকে ঘিরে ধরে তার পিছু নিয়ে স্লোাগান দিতে দিতে সামনে এগিয়ে যান তারা। তখন উপাচার্যকে নিয়ে উপস্থিত শিক্ষক, কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনের দিকে এগোলে শিক্ষার্থীরা তার পেছন পেছন সেখানে যান। পরে আইআইসিটি ভবনে ঢুকলে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে ফেলেন শিক্ষার্থীরা।

গত শনিবার সন্ধ্যায় বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজাসহ প্রভোস্ট বডির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর প্রশাসনের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের নেতৃত্বাধীন ৬ গ্রুপের নেতাকর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। এ হামলায় ১০-১২ জন শিক্ষার্থী আহত এবং কয়েকজন ছাত্রী হেনস্তার শিকার হয়েছে বলে জানা যায় গেছে।

এছাড়া রোববার প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগের দাবিসহ তিন দফা দাবি আদায়ে ছাত্রীদের চলমান আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগে সকাল থেকে রাস্তা অবরোধ করে রেখেছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় ক্যাম্পাসে কোন ধরনের যানবাহন ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরে দুপুর পৌঁনে তিনটার দিকে গোলচত্বরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, প্রক্টর ড. আলমগীর কবীর, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দীন আহমদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মহিবুল আলম। কিন্তু সেখানে কোনো ধরনের ফলফসূ সিদ্ধান্তে পোঁছাতে পারেননি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২২
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।